নবিজি সা এর পর যারা বাদশা হবে তাদের নাম - কিতাবুল ফিতান
নবিজি সা এর পর যারা বাদশা হবে তাদের নাম - কিতাবুল ফিতান
হযরত আবু সালেহ রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি এরশাদ করেন, একদা খলীফা ওসমান ইবনে আফফানের সাথে মোয়াবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ান রাযিঃ ভ্রমন করছিলেন, চলার পথে জনৈক গায়ক কবিতা আকারে বলছিলেন, ওসমান ইবনে আফফান পরবর্তী আমীর হবেন, আলী ইবনে আবি তালেব, শক্ত সমর্থ পুরুষ সকলে তার উপর রাজী থাকবে। বর্ণনাকারী কাব রহঃ বলেন, কাফেলার এক পার্শ্বে হযরত মোয়াবিয়া ধূসর রংয়ের একটি খচ্চরের উপর আরোহন করে চলছিলেন। ঐ সময় কাব বলেন, আলীর পরবর্তীতে আমীর হবেন, ধূসর রংয়ের বাহনের উপর আরোহী লোকটি।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ২৬৯ ]
হযরত হারেস ইবনে ইয়াযিদ রহঃ থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, আমি উতবা ইবনে রাশেদ আস সাদাফী কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, আমি আব্দুল্লাহ ইবনে আমরের বের হওয়ার অপেক্ষায় ছিলাম তিনি বলেন, আমি এক্ষুনি আব্দুল্লাহ ইবনে আমরকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, জাব্বারদের পর জনৈক জাব্বারের আবির্ভাব হবে, যদ্বারা আল্লাহ তাআলা উম্মতে মুহাম্মাদিয়াদেরকে শাস্তি দিবেন। এরপর মাহদী, মানসূর সালাম এবং গোত্রের জিম্মাদারগন ক্ষমতাশালী হবেন। এসময় পার হওয়ার পর যদি তোমার মৃত্যুর সামর্থ্য থাকে তাহলে যেন সে মারা যায়।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ২৭০]
হযরত কাব রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাআলা হযরত ইসমাঈল আঃ এর বংশধরদের মধ্যে মোট বারোজন জিম্মাদার প্রেরন করবেন। তাদের সর্বোত্তম ও আফজাল হচ্ছেন, হযরত আবু বকর রাযিঃ হযরত ওমর রাযিঃ হযরত ওসমান যুননূরাইন রাযিঃ যাকে মাজলূম নির্মমভাবে শহীদ করা হবে। যিনি দ্বিগুন প্রতিদান প্রাপ্ত হবেন। আরেকজন ক্ষমতার অধিকারী হয়ে শাম দেশের শাসক থাকবেন, তার পুত্র, সিফাহ, মানসূর, সালাহ এবং আফিয়াহ ।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ২৭১ ]
ইয়াদৃম আল হিময়ারী রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি তাবী ইবনে আমের রহঃ কে বলতে শুনেছেন, সিফাহ নামক শাসক দীর্ঘ চল্লিশ বৎসর পর্যন্ত জীবিত থাকবেন তাওরাত নামক আসমানী কিতাবে তার নাম তাইরুস সামা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ২৭২]
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি এরশাদ করেন, অতিসত্ত্বর বেশ কয়েকজন খলীফা এই উম্মতের দায়িত্বভার গ্রহন করবেন, তাদের প্রত্যেকে নেককার এবং সালেহ হবেন। তাদের হাতেই অনেক ভূখন্ড জয় হবে। প্রথম বাদশাহ এর নাম হবে জাবের। বর্ণনাকারী ইবনে নুআইম রহঃ বলেন, তার হাতে আল্লাহ তাআলা মানুষদের উপর জুলুম করবেন।
দ্বিতীয় ব্যক্তি হবেন আল মুফরাহ। তিনি ছানা বিশিষ্ট পাখির মত হবেন।তৃতীয় বাদশাহ হবেন, যুল আসাব, তিনি দ্বীর্ঘ চল্লিশ বৎসর পর্যন্ত ক্ষমতাসীন থাকবে। তাদের পর পৃথিবীতে আর কোনো কল্যান বাকি থাকবেনা। বর্ননাকারী বলেন, যুল আসাবের ব্যাপারে আর কি বলা হয়েছে সেটা আমি ভুলে গিয়েছে। তবে তিনি ভাল লোক হবেন।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ২৭৩ ]
হযরত মুগীছ আল আওযায়ী রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বর্ননা করেন, একদিন হযরত ওমর রাযিঃ কাব রহঃ কে জিজ্ঞাসা করেন যে, তার সম্বন্ধে কাব কি জানতে পেরেছে, জবাবে কাব রহঃ বলেন, সে একজন লৌহ মানব হবে এবং আল্লাহ তাআলার বিধান সাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কোনো ভর্ৎসনাকারীর ভর্ৎসনাকে ভয় পাবেনা।
অতঃপর ওমর বললেন, এরপর কি বলা হয়েছে? জবাবে হযরত কাব রহঃ বললেন, আপনার পর এমন একজন খলীফা হবেন, যাকে তার উম্মতও প্রজাগন নির্মমভাবে হত্যা করবে। অতঃপর ওমর রাযিঃ জিজ্ঞাসা করেন, এরপর কি হবে। জবাবে হযরত কাব রহঃ বলেন, হযরত ওসমান কে হত্যা করার পর বিভিন্ন ধরনের ফেৎনা ও বালা মসীবতের আত্নপ্রকাশ হবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ২৭৪ ]
হযরত কাব রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি এবং ইয়াশু স্বাক্ষাৎ করেন, যিনি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নবী হিসেবে প্রেরীত হওয়ার পূর্বের কিতাব সমূহের আলেম ছিলেন, তারা উভয়জন পৃথিবীতে সংঘটি হওয়া বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করছিলেন। এক পর্যায়ে ইয়াশু রহঃ বলেন, জনৈক নবীর আত্নপজকাশ হবে এবং তার দ্বীন অন্যান্য দ্বীনের উপর প্রাধান্য বিস্তার করবে। তার উম্মতগন ও অন্য সকল উম্মতের উপর আধিক্য অর্জন করবে। তারা সৎকাজের আদেশ করবে এবং অসৎকাজ থেকে নিষেধ করবে।
এসব কথা শুনে কাব বললেন, আপনি সঠিক কথাই বলেছেন, অতঃপর ইয়াশু তাকে বললেন, হে কাব! তাদের বাদশাহদের সম্বন্ধে আপনি কি কিছু জানেন? জবাবে হযরত কাব রহঃ বলেন, হ্যা, তাদের মধ্যে মোট বারোজন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা গ্রহ করবেন। তাকে শহীদ করার পর আল আমীন ক্ষমতাধীন হবেন। তাকেও নির্মম ভাবে শহীদ করা হবে।
অতঃপর বাদশাহদের প্রথম ব্যক্তি রাষ্ট্র পরিচালনা করার পর মৃত্যু বরন করবেন। এরপর সাহেবুল আহরাছ ক্ষমতাসীন হওয়ার পর মারা যাবেন। অতঃপর সাহেবুল আসার ক্ষমতার মালিক হবেন। তিনিই হচ্ছেন, বাদশাহদের মধ্যে সর্বশেষ মৃত্যু বরনকারী। তারপর সাহেবুল আলামাত ক্ষমতার মালিক হওয়ার পর মারা যাবে। ইবনু মাহেক আযযাহাবিয়্যাতকে হত্যা করার পর পৃথিবীতে বিভিন্ন ধরনের ফেৎনা ফাসাদ ছড়িয়ে পড়বে।
ঐ সময় থেকে যাবতীয় বালা মসীবত দেখা যাবে এবং মানুষের কাছ থেকে ভ্রাতৃত্ববোধ উঠে যাবে। অতঃপর সাহেবুল আলামতের বংশধর থেকে চারজন বাদশাহ ধারাবাহিক ভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। তাদের দুইজন এমন হবেন যাদের জন্য কোনো বই পুস্তক পাঠ করা হবেনা, আরেকজন কয়েক মাত্র রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্টিত হওয়ার পর নিজের বিছানায় মৃত্যু বরন করবেন।
আরেকজন বাদশাহর আবির্ভাব হবে জারফ নামক এলাকার দিক থেকে তার হাতেই যাবতীয় বিশৃঙ্খলার সূচনা হবে এবং তার অধীনে শাহী মুকুট চূর্ণ বিচূর্ণ করা হবে। তিনি একশত বিশদিন পর্যন্ত হিমসের শাসনভার পালন করবেন। তার প্রতি তার ভূখন্ড থেকে এক ধরনের আতংক এগিয়ে আসবে যা তাকে এখান থেকে চলে যেতে বাধ্য করবে। অতঃপর জারফ নামক এলাকাতেও বালা মসীবত প্রকাশ পাবে। যার কারনে তাদের পরস্পরের মাঝে মারাত্নক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ২৭৫ ]
হযরত ইউনুছ ইবনে মায়সারা আল জাবলানী রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ এরশাদ করেছেন । উক্ত রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা মদীনা থেকে পরিচালিত হবে, পরবর্তীতে সেটা শাম দেশের দিকে চলে যাবে, অতঃপর জাযিরা থেকে পরিচালিত হবে অতঃপর ইরাক থেকে অতঃপর বায়তুল মোকাদ্দাস থেকে, যখন রাষ্ট্র ক্ষমতা বায়তুল মোকাদ্দাস থেকে পরিচালনা হতে থাকবে মূলতঃ তখনই সেটা ধূলিস্যাৎ হয়ে যাবে। যারাই সেখান থেকে বের হবে উক্ত সমস্যা তাদেরকেও গ্রাস করে নিবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ২৭৬ ]
হযরত আরতাত ইবনে মুনজির রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমার নিকট রাসূলুল্লাহ সাঃ থেকে সংবাদ পৌঁছেছে, তিনি এরশাদ করেন, নবুওয়াতী দায়িত্ব আমার পরে তিন স্থান থেকে পরিচালিত হবে, মক্কা, মদীনা এবং শাম। এই তিন স্থান থেকে উক্ত দায়িত্ব সরে আসলে, সেটা আর কিয়ামত পর্যন্ত ফিরে আসবেনা।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ২৭৭ ]
হযরত কুরাব ইবনে আবদে কুলাল থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, হযরত কাব এ আহবার রহঃ আমাদেরকে সংবাদ দিয়েছেন, নিশ্চয় খলীফা মানসূর পনের খলীফার পাচ নম্বর খলীফা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ২৭৮ ]
হযরত কাব রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি এরশাদ করেন, মানসূর সংবাদ দিয়েছেন, খলীফা মানসূর বনূ হাশেম থেকে হবেন ।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ২৭৯ ]
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হে ইয়ামান বাসী তোমাদের দাবি হচ্ছে, খলীফা মানসূর তোমাদের গোত্রের। না, কখনো নয় কসম সে সত্ত্বার যার হাতে আমার প্রান রয়েছে, নিঃসন্দেহে খলীফা মানসূর এর পিতা কুরাইশ বংশের হবে। যদি আমি ইচ্ছা করি তার আখেরী দাদার প্রতি তাকে নিসবত করতে তাহলে অবশ্যই আমি সেটা করতে পারব।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ২৮০ ]
হযরত ইবনে আউন রহঃ মুহাম্মদ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, মোয়াবিয়া রাযিঃ এর পর যিনি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা পালন করবেন, তার নাম হবে সালাম।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ২৮১]
হযরত ইয়াদুম আল হিময়ারী রহঃ থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি তাবী ইবনে আমের কে বলতে শুনেছি, সিফাহ নামক বাদশাহ দীর্ঘ চল্লিস বৎসর পর্যন্ত জীবিত থাকবেন, তার নাম তাওরাত নামক আসমানী কিতাবে আসমানের পাখি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ২৮২]
হযরত আরতাত রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, গোত্রের আমীরগন তেমন কোনো যোগ্যতা সম্পন্ন না হলেও জিন ইনসান সকলের কথা শুনবে। তারা এমন এক লোকের হাতে বাইয়াত গ্রহন করবেন, যার নামে কোনো প্রকারের কলঙ্ক থাকবেনা। তবে তারা হবেন ইয়ামানী খলীফা। বর্ণনাকারী ওলীদ ইবনে মুসলিম রহঃ বললেন, কাবে আহবারের জানা মতে, তিনি হবেন ইয়ামানী, কুরাইশী এবং গোত্রের আমীর। তিনিও ইয়ামানী হবেন। তারা এবং তাদের অনুসারীগনকে বাইতুল মোকাদ্দাস থেকে বের করে দেয়া হবে ।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ২৮৩ ]
হযরত আবু হোরায়রা রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি এরশাদ করেন, কাহতানের এক লোক লোকজনকে তাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত কিয়ামত সংঘটিত হবেনা।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ২৮৪ ]
হযরত কাব রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আব্বাছ রাযিঃ এর বংশধর থেকে মোট তিনজন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা গ্রহন করবে, মানসূর, মাহদী এবং সিফাহ ।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ২৮৫ ]
হযরত আব্দুর রহমান ইবনে কাইস ইবনে জাবের আসসাদাফী রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাঃ এরশাদ করেন, পৃথিবীর বেশ কয়েকজন প্রতাপশালী ক্ষমতা পরিচালনা করার পর আমার বংশের জনৈক ন্যায়পরায়ন লোক ক্ষমতা গ্রহন করবেন। তিনি গোটা পৃথিবীতে ইনসাফে পরিপূর্ন করে দিবেন। অতঃপর কাহতানের একলোক ক্ষমতার মালিক হবেন। কসম সে সত্ত্বার যিনি আমাকে হক্ব নিয়ে প্রেরন করেছেন, দ্বিতীয়জন প্রথম খলীফা থেকে নিম্নমানের হবেন।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ২৮৬ ]
হযরত আলী রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন ইমামগন কুরাইশ বংশ থেকে হবেন, তাদের উত্তম প্রজাদের খলীফাও উত্তম হবেন, এবং খারাপ প্রজাদের ইমামও খারাপ। নিঃসন্দেহে কুরাইশদের পর জাহিলিয়্যত বিহীন আর কিছুই থাকবেনা।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ২৮৭ ]
হযরত ওমর ইবনে আব্দুর রহমান আয যিমারী রহঃ বর্ণনা করেন যে, নিতফানের কবরে একটি লিখিত পাথর পাওয়া যায়। আব্দুর রহমান বলেন, সেখানে আমি লিখিত দেখতে পেলাম যে, ক্ষমতায় থাকবে কোমল হৃদয়ের জোতিষি। এবাদত ইত্যাদিতে থাকবে দৃঢ়তাও উদ্যমী। তার সাথে পাওয়া যাবে অলঙ্কার ও সঞ্চিত বিষয় সমূহ। বৈধ করা হবে আগত ষাড়ের মাধ্যমে। তোমার সাথে আমার হিযরত হবে হিমইয়ারুল আখইয়ার এর সহযোগিতায়।
অতঃপর নিকৃষ্ঠত হাবশীগন ক্ষমতার মালিক হবে। তাদের পর আযাদ পারস্য বাসিরা ক্ষমতাসীন হবেন। এরপর আশ্রয় গ্রহনকারী কুরাইশগন ক্ষমতার মালিক হবেন। এরপর নানান ধরনের বিশৃঙ্খলা সমাজে ছড়িয়ে পড়বে। প্রত্যেকবার যারা ক্ষমতার মসনদে বসবেন তারা হবেন খুবই বিচক্ষন এবং পরস্পরের সাথে শত্রুতা পোষনকারী। যারা তার বিরোধীতা কারীদেরকে কোনঠাসা করে রাখবেন।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ২৮৮ ]
হযরত কাব রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, কোন বাদশাহ সফলকাম জিজ্ঞাসা করা হলে বলা হয় হিমইয়ারুল আখইয়ার, অতঃপর যখন জিজ্ঞাসা করা হয় যে, কোন শাসক সফলতার শীর্ষে অবস্থানকারী জবাব দেয়া হয় যে নিকৃষ্টতম হাবশী সম্প্রদায়। আবারো যখন জানতে চাওয়া হয় যে, কে সফল বাদশাহ, জবাবে তিনি বলেন, আসাদ পারস্যদের জন্য যাকে নির্বাচন করা হয়। আবারো জিজ্ঞাসা করা হয় যে, কোন বাদশাহ সফলকাম। জবাবে বলা হয় আশ্রয় দাতা কুরাইশের জন্য যাকে নির্বাচন করা হয়েছে। আবারো যখন জানতে চাওয়া হয় যে, কোন বাদশাহ সফলতার শীর্ষে অবস্থান করছে, জবাবে বলা হলো, সামুদ্রীক হিমইয়ার বাসীদের জন্য যাকে নির্বাচন করা হবে। বর্ণনাকারী হাকাম রহঃ বলেন, হিমইয়ারের অর্থ হচ্ছে, ব্যবসায়ীগন।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ২৮৯ ]
হযরত নাফে রহঃ থেকে বর্ণিত, হযরত ওমর রাযিঃ এরশাদ করেন, আমার সন্তানদের একজন যার চেহারা দাগ বিশিষ্ট থাকবে, তিনি ক্ষমতাসীন হবে। তিনি গোটাজগতে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করবে। হযরত নাফে রহঃ বলেন, আমার ধারনা হচ্ছে, তিনি হচ্ছেন ওমর ইবনে আব্দুল আযীয় রহঃ।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ২৯০ ]
হযরত কাতাদাহ রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি এরশাদ করেন, ওমর ইবনে আব্দুল আযীয রহঃ বলেন, আমি একদিন রাসূলুল্লাহ সাঃ কে স্বপ্নে দেখলাম, তার পার্শ্বে ছিলেন, আবু বকর, ওমর, ওসমান ও আলী রাযিঃ আমাকে দেখে তিনি বলেন, কাছে এসো, একথা শুনে যখন আমি তার কাছে গিয়ে দাড়ালাম তখন তিনি আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বললেন, নিঃসন্দেহে তুমি অতিসত্ত্বর এই উম্মতের জিম্মাদারী গ্রহন করবে, এবং তাদের উপর ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ২৯১ ]
হযরত ওলীদ ইবনে হিশাম রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একজন ইহুদীর সাথে আমার স্বাক্ষাৎ হলে তিনি আমাকে বললেন, হযরত ওমর ইবনে আব্দুল আযীয রহঃ অতি সত্ত্বর এই জিম্মাদারী গ্রহন করবে এবং ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করবেন। পরবর্তীতে আবারো তার সাথে স্বাক্ষাৎ হলে তিনি আমাকে বলেন, নিঃসন্দেহে তোমার সাহেব দায়িত্ব প্রাপ্ত হয়েছেন, আপনি তাকে বলেন, যেন সে নিজেকে সংস্কার করতে পারে।
আমি তার সাথে স্বাক্ষাৎ করে ঘটনাটি বললাম, আমার কথা শুনে তিনি বললেন, তোমার ধ্বংস হোক, আমি সে ব্যাপারে কিছুই জানিনা। তবে আমি এতটুকু জানি যে, একটি সময় আসবে আমি তখন পানি পান করাবো। যদি ঘোষনা দেয়া হয় যে, আমার সুস্থতা আমার কানের লতি স্পর্শ করার মাঝে নিহিত হয়েছে তাহলে আমি সেটা গ্রহন করব। অথবা যদি আমার সামনে কোনো সুগন্ধি পেশ করা হয় এবং আমি সেটকে গ্রহন করার জন্য আমার নাকের দিকে নিয়ে যাই তাহলে আমি সেটা করব।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ২৯২]
হযরত ওমর রাযিঃ এর মোয়াজ্জিন উকাইলী রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন হযরত ওমর রাযিঃ আমাকে খ্রীষ্টান ধর্ম যাজকের কাছে পাঠালেন, যেন তাকে ডেকে আনা হয়। তিনি উপস্থিত হলে হযরত ওমর রাঃ তাকে বললেন, তোমার জন্য শুভ কামনা রইল, তোমদের কাছে কি আমার কোনো বৈশিষ্ট জানা আছে।
জবাবে সে বলল, হ্যা হে আমীরুল মুমিনিন! তার কথা শুনে ওমর রাযিঃ বললেন, সেটা কেমন, জবাবে বলা হলো লোহার শিংয়ের ন্যায় ওমর রাযিঃ জিজ্ঞাসা করলেন, সেটা আবার কি? বিশপ বললেন, শক্তিশালী একজন পুরুষ। হযরত ওমর রাযিঃ আলহামদুলিল্লাহ বলে বললেন তারপর কি রয়েছে। জবাবে বিশপ বললেন, আপনার পর এমন একজন খলীফা হবেন, তার মধ্যে তেমন কোনো রনশক্তি না থাকলেও তিনি তার নিকটাত্নীদের দ্বারা প্রভাবিত হবেন, একথা শুনে হযরত ওমর রাযিঃ বললেন, আল্লাহ তাআলা যেন, ওসমানের উপর দয়া করেন ! আল্লাহ তাআলা যেন, ওসমানের উপর দয়া করেন!!
এরপর ওমর জানতে চান, তারপর কি হবে? জবাবে বিশপ বললেন, পাথরের মধ্যে আঘাত করা হবে। হযরত ওমর রাযিঃ তার ব্যাখ্যা জিজ্ঞাসা করলে তিনি জবাব দেন, উন্মোক্ত তলোয়ার এবং ব্যাপক হারে গন হত্যা চলতে থাকবে। একথাটি হযরত ওমরের কাছে খুবই বেদনাদায়ক মনে হওয়ায় তিনি বললেন, গোটা দিন তোমার ধ্বংস হোক। অতঃপর উক্ত ধর্ম যাজক বললেন, হে আমীরুল মুমিনীন! এরপর কিন্তু একটি দল গঠিত হবে। বর্ণনাকারী ওকাইলী বলেন,
এরপর ওমর রাযি আমাকে বললেন, হে ওকাইলী! দাড়িয়ে আযান দাও। তারপর তিনি খ্রীষ্টীয় ধর্ম যাজকের কাছে আর কিছু জানতে চেয়েছেন কিনা আমি জানিনা।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ২৯৩ ]
হযরত কাব রহঃ থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, আল্লাহ তাআলা নবী, খলীফা এবং বাদশাহ একমাত্র গ্রাম এবং শহর বাসীদের থেকে প্রেরন করেছেন, অবশ্যই তারা উক্ত দায়িত্ব গ্রাম ও শহর বাসীদের মধ্য থেকে হওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী নয় ।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ২৯৪ ]
Comments 0