হাদিস -১

আলি রাঃ থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, কুফায় ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর পর সুফিয়ানি ঐ ব্যক্তির নিকট পত্র লিখবে, যে তার ঘোড়া নিয়ে কুফায় প্রবেশ করেছে। সে পত্রে তাকে হিজাজের দিকে অগ্রসর হওয়ার আদেশ দিবে। ফলে সে মদিনার দিকে অগ্রসর হবে।

অতঃপর সে কুরাইশের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করবে। অতঃপর সে তাদের থেকে এবং আনসারদের থেকে চারশত লোককে হত্যা করবে। মহিলাদের পেট চিড়বে। শিশুদের হত্যা করবে। আর কুরাইশের দুইজন ব্যক্তিকে হত্যা করবে, একজন পুরুষ ও তার বোনকে। তাদেরকে মুহাম্মাদ ও ফাতেমা বলা হবে এবং তাদেরকে মদিনার মসজিদের গেটে শুলে চড়ানো হবে । 

[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৯২২ ]

হাদিস -২

আলি রাঃ থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, মদিনায় এক সৈন্যদল প্রেরণ করা হবে। অতঃপর তারা রাসুল -এর পরিবার পরিজনদের মধ্যে যারা সক্ষম তাদের আটক করবে। আর বনু হাশেমের পুরুষ ও মহিলাদেরকে হত্যা করবে। আর ঐ সময়ই ইমাম মাহদি ও মুবইয়ায মদিনা থেকে মক্কায় পলায়ন করবেন। অতঃপর তাদের দুজনের অনুসন্ধানের জন্য সৈন্য প্রেরণ করা হবে। আর তারা দুজন গিয়ে পৌঁছবে আল্লাহ -র নিরাপদ স্থান হারাম অর্থাৎ মক্কায় ।

[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৯২৩ ]

[ নোট: আর এখানেই তার হাতে মানুষ বাইয়াত হবে। এখান থেকেই ইমাম মাহদির আত্মপ্রকাশ ও যুদ্ধযাত্রা শুরু হবে ]

হাদিস -৩

হযরত আলী ইবনে আবু তালের রাযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন যখন মদীনার মানুষের নিকট সুফিয়ানীর সৈন্যবাহিনির খবর পৌছাবে, তখন তারা মদীনা হতে মক্কার দিকে পালায়ন করবে। তাদের হতে কুরাইশদের তিনজন ব্যাক্তি এমন হবে, যাদের দিকে মানুষ তাকিয়ে থাকবে।

[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৯২৪ ]

হাদিস -৪

হযরত কা'ব রাযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন তখন মদীনাকে হালাল মনে করা হবে। অর্থাৎ মদীনার সম্মান নষ্ট করা হবে। আর নিস্পাপ মানুষকে হত্যা করা হবে।

[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৯২৫ ]

হাদিস -৫

হযরত হানাশ ইবনে আব্দুল্লাহ রাঃ হতে বর্ণিত, তিনি ইবনে আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহু কে বলতে শুনেছেন যে, মদীনায় অচিরেই একজন বনু হাশেম হতে একজন খলীফা হবে। অতপর মদীনার জনগন তাদের থেকে বের হয়ে মক্কায় চলে যাবে। অতপর যখন তারা মক্কায় আসবে তখন মক্কার বাদশা তাদের নিকট যারা আসবে সকলকে তাদের নিকট পাঠিয়ে দিবে। আমাদের নিকট কি তোমরা স্বস্তি পাওয়ার ধারণা করছ? অতপর তাদেরকে বনু হামেমের এক ব্যক্তি ফিরিয়ে নিয়ে আসবে। এবং তার উপর ক্রোধান্বিত হবে।

অতপর মক্কার বাদশা তার উপর ক্রোধান্বিত হবে। অতপর তাকে হত্যার আদেশ দিবে। ফলে তাকে হত্যা করা হবে। অতপর যখন দিন পার হয়ে পরবর্তী দিন আসবে তখন তাদের থেকে একজন ব্যক্তি আসবে। তার কাপড়ে তরবারী জড়ানো থাকবে। অতপর বাদশাকে উদ্দেশ্য করে বলবে, আমাদের সাথীকে হত্যা করার ব্যাপারে তোমাকে কিসে উদবুদ্ধ করলো?  বাদশা বলবে সে আমাকে ক্রোধান্বিত করেছে।

অতপর লোকটি বলবে, হে মুসলিম সম্প্রদায় তোমরা সাক্ষি থাকো এ কথার উপর যে, সে তাকে হত্যা করেছে কারণ সে তাকে ক্রোধান্বিত করেছে। অতপর সে তার তরবারী কোষমুক্ত করবে। তা দ্বারা বাদশাকে আঘাত করবে। অতপর তারা তায়েফের দিকে ঝোঁকবে তথা তায়েফে যাওয়ার জন্য রওয়ানা দিবে।

অতপর মক্কার অধিবাসীদের নিকট যখন তাদের খলীফার খবর পৌছবে তখন তারা বলবে আল্লাহর কসম! তারা আমাদের ক্ষতি করেছে। আমরা তাদের ছাড়বো না। তিনি বলেন অতপর তারা তাদের দিকে সফর করবে। অতপর হাশেমীরা তাদের নিকট আল্লাহ তা'আলার ওয়াসেতায় অনুনয় বিনয় করবে। এবং বলবে আমাদের রক্তের তোমাদের রক্তের মাঝে আল্লাহ আছেন। তোমরা ভালভাবে জান যে, বাদশা আমাদের সাথীকে অন্যায় ভাবে হত্যা করেছে। কিন্তু তারা তাদের থেকে ফেরৎ যাবে না। তাদের সাথে যুদ্ধ করবে। অতপর তাদের পরাজিত করবে। এবং তারা মক্কায় প্রভাব বিস্তার করবে (রাজত্ব করবে )।

অতপর তাদের সাথে সংগঠিত সকল বিষয়ের সংবাদ মদীনার বাদশার নিকট পৌঁছবে। তখন তারা বলবে, আল্লাহর কসম! যদি আমরা তাদের ছেড়ে দেই তাহলে আমরা নিশ্চই খলীফাকে বিপদে ফেলবো। (আমরা তাদের কোন মতেই ছাড়বো না।) অতপর মদীনার বাদশা তাদের দিকে একটি সৈণ্য দল প্রেরণ করবে। তখন তারা তাদেরকে পরাজিত করবে। অতপর যখন খলীফা তাদের দিকে সৈন্য প্রেরণ করবে তারা ঐ সমস্ত লোক যারা তাদের নিয়ে ধ্বংস হয়ে যাবে।

[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৯২৬ ]

হাদিস -৬

হযরত ইউসুফ ইবনে ফুল কিরইয়াত রাঃ হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন সিরিয়ায় একজন বাদশা হবে। যে মদীনায় যুদ্ধ করবে। যখন মদীনাবাসীদের নিকট তাদের দিকে আগত বাহিনীর পৌছবে তখন তাদের থেকে সাতটি দল মক্কার দিকে বের হয়ে যাবে। সেখানে তারা তাদের কে হালকা মনে করবে। অর্থাৎ নিজেদের হেফাজত মনে করবে।

অতপর মদীনার খলীফা মক্কার খলীফার নিকট একটি পত্র লিখবে। যাতে সে তাকে বলবে, আপনার এলাকার অমুক অমুক এসেছে। সে পত্রে তাদের নাম সহ উল্লেখ করবে। সুতরাং আপনি তাদের হত্যা করে দিন। মক্কার খলীফার নিকট বিষয়টি কঠিন মনে হবে। অতপর তারা একে অপরের সাথে পরামর্শ করবে। অতপর তারা তার নিকটে রাত্র বেলায় আসবে। তারা তার অনুরোধ রক্ষা করবে। অতপর সে বলবে তোমরা মক্কা থেকে নিরাপদে বের হয়ে যাও। ফলে তারা বের হয়ে যাবে।

অতপর তাদের থেকে দুই জন লোককে পাঠানো হবে। তাদের একজনকে হত্যা করা হবে। আর অপর জন দেখতে থাকবে। অতপর সে তার সাথীদের কাছে ফিরে যাবে। অতপর তারা বের হবে এমনকি তারা তায়েফের পাহাড় সমূহ থেকে কোন এক পাহাড়ে অবতরণ করবে এবং সেখানে অবস্থান করবে। তারা জনগণের নিকট (তাদের বার্তাবহক) পাঠাবে। ফলে তাদের দিকে মানুষের ঢল বয়ে যাবে। যখন এই বিষয়গুলি ঘটবে তখন তারা মক্কাবাসীদের সাথে যুদ্ধ করবে। এবং তাদের পরাজিত করে মক্কায় প্রবেশ করে মক্কার আমীর বা নেতাকে হত্যা করবে। অতপর তারা সেখানে থাকতে থাকবে। আর এরই মধ্যে যখন যমিন সৈন্য সহকারে ধসে যাবে তখন তার আগমনের ব্যাপারটা প্রস্তুত হবে এবং সে বের হবে।

[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৯২৭ ]

হাদিস -৭

ইবনে শিহাব হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন যখন তারা মদীনায় আসবে তখন তারা তিন দিন মদীনার অধিবাসীদের হত্যা করবে।

[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৯২৮ ]

হাদিস -৮

হযরত আবু জা'ফর রাযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন যখন মদীনাবাসীদের নিকট এখবর পৌঁছবে যে, তাদের দিকে সৈন্য আসছে। তখন মদীনায় হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পরিবার বর্গের যারা অবস্থান করবে তারা মদীনা হতে ভেগে মক্কায় চলে যাবে। আর সে সময় সমর্থবান ব্যক্তি দূর্বল ব্যক্তিকে, বড়রা ছোটদেরকে বহন করবে। অতপর তারা হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পরিবারের থেকে এক ব্যক্তিকে পাবে। তাকে তারা আহযারুয যাইত নামক স্থানে (যবাহ করে) হত্যা করে দিবে

[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৯২৯ ]

হাদিস -৯

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত যে তিনি বলেন মদীনার ঘটনার (যুদ্ধের) আলামত বা নিদর্শন হল, যখন মিসরের আমীর আসবে।

[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৯৩০ ]

হাদিস -১০

হযরত আব্দুস সালাম ইবনে মাসলামাহ রাঃ হতে বর্ণিত যে, তিনি হযরত আবু কুবাইলকে বলতে শুনেছেন যে, সুফিয়ানী মদীনায় সৈন্য প্রেরণ করবে। এবং সেখানে অবস্থানরত বনু হাশেম গোত্রের সকলকে হত্যা করার আদেশ দিবে। এমনকি গর্ভবতীকেও। আর এটা ঐসময় ঘটবে যখন হশেমী ব্যক্তি সৈন্য প্রস্তুত করবে। যে তার সাথীদের সাথে পূর্বাঞ্চল হতে বের হয়ে গেছে ।

সে বলবে উহার পুরোটাই কি ধরণের বিপদ? যা আমার সাথীদের পূর্ববর্তীদের ব্যতীত তাদের সকলকে হত্যা করেছে। অতপর সে তাদের হত্যার আদেশ দিবে। ফলে তাদের হত্যা করা হবে। এমনকি তাদের কোন একজনকেও মদীনায় দেখা যাবে না। তারা সেখান থেকে পৃথক পৃথক হয়ে গ্রাম্য এলাকা, পাহাড় পর্বত, ও মক্কার দিকে পালায়ন করবে। এমনকি তাদের মহিলাগণও পালায়ন করবে।

তার সৈন্য তাদের মাঝে অনেক দিন পর্যন্ত তরবারী রাখবে। অতপর তাদের থেকে হাত গুটিয়ে নিবে। ফলে তারা ভীতিগ্রস্থ প্রকাশ পাবে। আর এরই মধ্যে মক্কায় ইমাম মাহদী আলাইহিস সালামের বিষয়টি প্রকাশ পাবে। যখন মাহদী আলাইহিস সালামের অবির্ভাব ঘটবে তখন তার দিকে তাদের প্রত্যেক পথ প্রদর্শন কারী মক্কায় একত্রিত হবে।

[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৯৩১ ]

হাদিস -১১

হযরত আবু হুরাইরা রাযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন মদীনায় একটি যুদ্ধ হবে। যে যুদ্ধে মদীনার নিকটবর্তী উন্মুক্ত যে আহজারুয যাইত (তেলের খনি) আছে সেটা ডুবে যাবে । তবে চাবুকের এক প্রহার এর পরিমান ব্যতীত। এরপর মদীনা হতে দুইজন দূত যাবে। অতপর মাহদী আলাইহিস সালামের নিকট বাইয়াত গ্রহন করবে।

[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৯৩২ ]