ফিতনার সময় সম্পদ ও সন্তান কম হওয়া মুস্তাহাব এবং তখন কোন ধরনের সম্পদ রাখা উত্তম
ফিতনার সময় সম্পদ ও সন্তান কম হওয়া মুস্তাহাব এবং তখন কোন ধরনের সম্পদ রাখা উত্তম
হযরত আবুল মুহাল্লাবও আবু উসমান রাযি থেকে বর্ণিত, তারা উভয়জন বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ এরশাদ করেছেন, যে লোক ফেৎনা কালীন উটের বহর লালন পালন করবে, কিংবা বিশাল সম্পদ গড়ে তুলবে গরীব কিংবা নিঃস্ব হয়ে যাওয়ার ভয়ে, সে কিয়ামতের দিন আত্নসাৎকারী হিসেবে আল্লাহ তাআলার সাথে সাক্ষাৎ করবে।
[আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ২১৪ ]
বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাঃ থেকে বর্ণনা করেন, ফেৎনা কালীন হাওদা বিশিষ্ট একটি উট একলক্ষ বড় শহর থেকে উত্তম হবে।
[আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ২১৫ ]
বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযি থেকে বর্ণিত, তিনি এরশাদ করেন, ফেৎনা কালীন সর্বোত্তম সম্পদ হবে, উন্নতমানের অস্ত্র এবং সুস্থ সবল ঘোড়া। যার উপর আরোহন করে বান্দা যেখানে খুশি সেখানে যেতে পারবে।
[আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ২১৬ ]
হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাঃ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন অতি সত্ত্বর এমন এক যুগ আসবে যখন মুসলমানদের জন্য সর্বোত্তম সম্পদ হবে বকরির পাল, যার সাথে সেই মুসলমান পর্বতের উঁচু স্থানে অবস্থান করবে। যেখানে বৃষ্টি ও দানা পানির সু ব্যবস্থা থাকবে এবং সে লোক তার দ্বীন সহকারে যাবতীয় ফেৎনা থেকে পালিযে় থাকতে পারবে।
[আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ২১৭ ]
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাঃ থেকে হাদীস বর্ননা করেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ এরশাদ করেন, ফেৎনার সময় সব চেযে় নেককার মানুষ হচে্ছ ঐ লোক যে অনেক গুলা বকরী নিযে় পর্বরে্তর উচু স্থানে চলে যায় এবং লোকজনের যাবতীয় ফেনা থেকে নিজেকে দুরে রাখে।
[আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ২১৮ ]
হযরত তাউস থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ এরশাদ করেন, ফেৎনা কালীন সর্বোত্তম মানুষ হচ্ছে, যে লোক তার ঘোড়ার লাগাম ধারন করে দুশমনের দিকে এগিযে় যায় এবং দুশমনের অন্তরে ভয়ভীতির সঞ্চার করে আর নিজেও দুশমনকে ভয় পায়। তেমনি ভাবে ঐ লোক সর্বোত্তম, যে জনসমাগম স্থল ত্যাগ পূর্বক তার দায়িত্বে থাকা আল্লাহ তাআলার যাবতীয় হক আদায় করে যায়।
[আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ২১৯ ]
হযরত ইবনুল খায়সাম রাযি থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাঃ এরশাদ করেন, ফেৎনা কালীন সর্বোত্তম লোক হচ্ছে ঐ ব্যক্তি যে আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করতে গিযে় গনীমতের মাল দ্বারা নিজের জিবিকা নির্বাহ করে। তেমনি ভাবে ঐ ব্যকি্ত উত্তম, যে পর্বতের উচ স্থানে আরোহন করে বকরীর মাধ্যমে অরি্জত আয় দ্বারা জীবন ধারন করে যায়।
[আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ২২০ ]
হযরত হাসান বসরী রহ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ এরশাদ করেছেন, কসম সেই সত্ত্বার যার হাতে আমার প্রান! আমার সাহাবাযে় কেরাম থেকে কিছু লোককে কিয়মতের দিন আমার সামনে পেশ করা হবে। তাদের দেখার সাথে সাথে আমি চিনতে পারব, তবে কিছুক্ষন পর আমার এবং তাদের মাঝে পর্দা সৃষ্টি হয়ে যাবে। এ অবস্থা দেখে আমি বলব, হে আমার রব! আমার সাহাবী, আমার সাহাবী! আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে জবাব আসবে, তাদের সম্বন্ধে তুমি জানোনা, তোমার পর তারা কেমন বেদআত ওকার্যক্রম আবিস্কার করেছিল।
[আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ২২২ ]
হযরত আরতাত রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সুফিয়ানী তার বিরোধীতা কারীকে হত্যা করে থাকে এবং তাকে কেটে টুকরো টুকরো করে দীর্ঘ ছয়মাস পর্যন্ত পাত্রের মধ্যে রেখে পাকাতে থাকে। বর্ণনাকারী বলেন মাশরিক, মাগরিব বাসীরা এমন কতক দৃশ্য দেখতে পাবে যা এই উম্মতের মধ্যে রাসূলল্লাহ সাঃ এর পরে খোলাফাদের যুগে সংঘটিত হবে মর্মে বর্ণনা পাওয়া যায়।
(আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২২৩ ]
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযিঃ থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাঃ এরশাদ করেছেন, মুসা আঃ এর উপদেষ্টাদের মত আমার পরেও কতক খলীফা আত্ন প্রকাশ করবে।
[আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ২২৪ ]
হযরত জাবের ইবনে সামুরা রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাঃ এরশাদ করেছেন, খেলাফতের জিম্মাদারী কুরাইশের বারোজন খলীফার দায়িত্বে থাকা পর্যন্ত সেটা খুবই সম্মানিত ও সুচারু রুপে পরিচালিত হবে।
[আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ২২৫ ]
হযরত আবৃত তোফাইল রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আব্দুল্লাহ ইবনে আমর আমার হাত ধরে বললেন, হে আমের ইবনে ওয়সিলা! কাব ইবনে লুআই এর বংশধর থেকে মোট বারোজন খলীফা হওয়ার পর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা নিযে় মারাত্নক বিশৃঙ্খলা দেখা দিবে। এরপর কিয়ামত পর্যন্ত আর কোনো ইমামের উপর লোকজন ঐক্যমত পোষন করবেনা
[আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ২২৬ ]
বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাছ রাযি থেকে বর্ণিত, একদিন তার সামনে বারোজন খলীফা এবং আমীরদের সম্বন্ধে আলোচনা করা হলে তিনি বলেন, আল্লাহর কসম!নিঃসন্দেহে এর পর থেকে সিফাহ, মানসূর এবং মাহদী খলীফা হবেন। তাদের পরে এভাবে চলতে চলতে হযরত ঈসা ইবনে মারইয়াম আঃ পর্যন্ত বহাল থকবে।
[আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ২২৮ ]
হযরত হোজোইফা ইবনুল হায়ামান রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হযরত ওসমান রাযিঃ এরপর থেকে বনু উমাইয়ার বারোজন বাদশাহ দাযি়ত্ব পালন করবেন। তাকে বলা হলো তারা তো খলীফা হিসেবে থাকবেন, জবাবে তিনি বললেন, না বরং তারা বাদশাহ হবেন।
[আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ২২৯ ]
বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আবু উবায়দা ইবনুল জাররাহ রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ এরশাদ করেন, এই উম্মতের প্রথম ব্যক্তি হবেন, নবুওয়ত ও রহমতের সাথে সম্পৃক্ত। এরপর হবে খেলাফত এবং রহমতের সাথে সংশ্লিষ্ট, অতঃপর পরস্পর বিরোধী বাদশাহগন রাষ্ট্রীয় দাযি়ত্ব পালনকারী হবেন। তাদের প্রাথমিক অবস্থায় পরস্পর বিরোধী হলেও রহমত থাকবে। অতঃপর টেকো মাথার অত্যাচারী শাসকের আত্নপ্রকাশ হবে। যাদের মধ্যে কোনো আন্তরিকতা থাকবেনা। পরস্পরের বিরুদ্ধে মারামারি হানাহানিতে লিপ্ত থাকবে। একে অপরের হাত পা কেটে নিবে এবং সম্পদ ছিনিয়ে নিতে থাকবে।
[আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ২৩৩ ]
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন দ্বিতীয় খলীফা ওমর ইবনুল খাত্তাব রাযিঃ এরশাদ করেন, যে দিন থেকে আল্লাহ তাআলা উক্ত জিম্মাদারী অর্পন করেছেন সেটা শুরু হযে়ছে, নবুওত ও রহমতের মাধ্যমে। পরবর্তীতে সেটা রহমত ও সুলতানে পরিনত হয়। এরপর সেটা বাদশাহ ও রহমতে পরিবর্তন হয়, আবারো খেলাফত ও রহমতে পরিনত হয়, এরপর সুলতান ও রহমতে পৌছে যায়, অতঃপর বাদশাহ ও রহমতে প্রবর্তন হবে। এরপর এমন কতক ন্যাড়া মাথা বিশিষ্ট জালেম বাদশাহ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা গ্রহন করবে যারা গাধার ন্যায় একে অপরকে কামড়াতে থাকবে এবং আক্রমন করবে।
[আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ২৩৬ ]
হযরত আবু নোমান আবু উবাইদ এবং বশীর ইবনে সাঈদ রহঃ থেকে বর্ণিত, তারা উভয়জন বলেন, প্রথমতঃ নবুওয়ত ও রহমত হিসেবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা চলতে থাকবে, অতঃপর সেটা খেলাফত এবং রহমত হিসেবে পরিবর্তন হবে। অতঃপর এমন কতক বাদশাহর আত্নপ্রকাশ হবে, যারা পরস্পরের বিরোধীতায় লিপ্ত হবে। তারা বিভিন্ন ধরনের জুলুস ও বিশৃঙ্খলায় জডি়যে় পড়বে। এ সকল বাদশাহ শরাব পান ও রেশমী কাপড় পরিধান করাকে বৈধ মনে করার পাশাপাশি যিনাকেও হালাল জানবে। এরপরও তারা আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে রিযিক ও সাহায্য প্রাপ্ত হবে।
[আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ২৩৯ ]
Comments 0