সুফিয়ানি কর্তৃক ইমাম মাহাদির প্রতি প্রেরিত সৈন্য ধসে যাবে - কিতাবুল ফিতান
সুফিয়ানি কর্তৃক ইমাম মাহাদির প্রতি প্রেরিত সৈন্য ধসে যাবে - কিতাবুল ফিতান
হযরত ইবনে ওহাব রাযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন আমি আবু ফারেস থেকে শুনেছি যে, তিনি বলেন, আমি আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাযিয়াল্লাহু আনহুকে বলতে শুনেছি যে, ইমাম মাহদী আলাইহিস সালামের অবির্ভাবের আলামত বা নিদর্শন হল, খোলা প্রান্তর সৈন্য সহকারে ধসে যাওয়া। আর সেটাই মাহদী আলাইহিস সালামের অবির্ভাবের আলামত।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৯৩৩ ]
[ নোটঃ এটি হবে সুফিয়ানি বাহিনী, যা বাইদা নামক অঞ্চলে ধসে যাবে ]
হযরত হানাস ইবনে আব্দুল্লাহ হতে বর্ণিত যে, তিনি হযরত ইবনে আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহু কে বলতে শুনেছেন যে, মদীনার খলীফা মক্কার হাশেমীদের দিকে সৈন্য প্রেরণ করবে। উক্ত সৈন্য দল তাদেরকে পরাজিত করবে। অতপর সিরিয়ার খলীফা এব্যাপারে অবহিত হবে। তখন সে তাদের উদ্দেশ্যে সৈন্য প্রেরণ করবে। যে সৈন্যদলে অভিজ্ঞ ছয়শত সেনা থাকবে।
যখন তারা খোলা প্রান্তরে আসবে ও সেখানে চাঁদনী রাতে অবতরণ করবে। কোন এক রাখাল সেখানে আসবে। এবং তাদেরকে দেখবে এবং আশ্চার্য্য বোধ করবে। আর সে বলবে হায় আফসোস!! মক্কা বাসীদের উপর কি আসছে (কি বিপদ আসছে।) অতপর সে তার পশুপালের কাছে যাবে। অতপর আবার ফিরে আসবে । কিন্তু তাদের একজনকেও দেখতে পাবে না। কেননা যমিন তাদের নিয়ে ধসে গেছে।
অতপর সে (আশ্চার্য্য হয়ে) বলবে সুবহান আল্লাহ। তারা সকলে এক মুহুর্তে চলে গেল। অতপর সে তাদের আবাসস্থলে আসবে। সেখানে সে মখমল বা এক প্রকার ফুল দেখবে যার কিছু অংশ ধসে গেছে, আর কিছু অংশ যমিনের উপরে আছে। সে উহার চিকিৎসা করবে কিন্তু সে সক্ষম হবে না। অতপর সে বুঝবে যে, যমিন তাদের নিয়ে ধসে গেছে।
অতপর সে মক্কার খলীফার নিকটে আসবে। এবং তাকে সুসংবাদ দিবে। উক্ত রাখালের কথা শুনে মক্কার খলীফা বলবে সকল প্রসংসা আল্লাহ তা'আলার জন্য। এটা সেই আলামত যার ব্যাপারে তোমাদেরকে আগে জানানো হয়েছে। অতপর তারা সিরিয়ার দিকে যাবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৯৩৪ ]
হযরত তাবে' হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন আশ্রয়প্রার্থী আচিরেই মক্কার নিকট আশ্রয় চাইবে। কিন্তু তাকে হত্যা করে দেওয়া হবে। অতপর মানুষ তাদের যুগের কিছু কাল বসবাস করবে। অতপর আরেকজন আশ্রয় চাইবে। যদি তুমি তাকে পাও তাহলে তোমরা তাকে আক্রমন করিও না। কেননা সে ধসনেওয়ালা সৈন্যদলের একজন সৈন্য ।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৯৩৫ ]
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সম্মানিতা স্ত্রী উম্মুল মু'মিনীন হযরত হাফসা রাযিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, এই ঘর উদ্দেশ্য করে পশ্চিম দিক হতে এক দল সৈন্য এখানে আগমন করবে।এমনকি যখন তারা খোলা প্রান্তরে থাকবে তখন উক্ত প্রান্তর তাদের নিয়ে ধসে যাবে।
অতপর উক্ত সৈন্য দলের ইমাম বা নেতা সেখানে ফিরে যাবে যাতে সে দেখতে পারে যে, তার জাতি কি কাজ করেছে। তখন তাদেরও ঐ পরিনতি ঘটবে যা ইতি পূর্বে তাদের ঘটেছে। আর তাদের পরবর্তীদের তাদের সাথে সাক্ষাৎ ঘটবে। যাতে সে দেখতে পারে যে, তারা কি করেছে। তাদেরও ঐ পরিনতি ঘটবে যা ইতি পূর্বে তাদের ঘটেছে।
অতপর যে ব্যক্তি উহাকে পুনারায় করতে চাইবে তার ঐ পরিনতিই হবে যা তাদের হয়েছে। অতপর আল্লাহ ত’আলা তার ইচ্ছা অনুযায়ী সকল বিষয় প্রেরণ করবেন।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৯৩৬ ]
হযরত মুহাম্মাদ ইবনে আলী হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন অচিরেই মক্কার আশ্রয়প্রার্থীর দিকে সত্তর হাজার সৈন্য প্রেরণ করা হবে। তাদের সম্মুখে কইসের এক ব্যক্তি থাকবে। এমনকি যখন তারা ছানিয়া পৌঁছবে তখন তাদের শেষ ব্যক্তি প্রবেশ করবে। কিন্তু সেখান থেকে তাদের প্রথম জনও বের হতে পারবেনা।
হযরত জীবরাঈল আলাইহিস সালাম খোলা প্রান্তরকে ডেকে বলবেন হে খোলা প্রান্তর! হে খোলা প্রান্তর!! (তার আওয়াজ পূর্বে পশ্চিমে সকলেই শুনবে)। তাদেরকে গ্রাস কর। ফলে তাদের কোন মঙ্গল থাকবে না।
পাহাড়ে অবস্থানরত একমাত্র ছাগলের রাখাল ব্যতীত তাদের ধ্বংসের কোন প্রকাশ্য আলামত থাকবে না। কেননা যখন তারা মাটিতে দেবে যাবে তখন সে তাদেরকে দেখবে। অতপর সে তাদের ব্যাপারে সকলকে সংবাদ দিবে। যখন আশ্রয়প্রার্থী তাদের ব্যাপারে শুনতে পাবে তখন সে বের হয়ে যাবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৯৩৭ ]
হযরত যি কারানাত রাঃ হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন যখন সুইয়ানী মিসরবাসীদের নিকট পৌঁছবে তখন সে মক্কাবাসীদের নিকট সৈন্যদল প্রেরণ করবে। হাররার ধ্বংসযজ্ঞের থেকে বেশী পরিমানে তারা মদীনাকে ধ্বংস করে দিবে। এমনকি যখন তারা খোলা প্রান্তরে পৌঁছবে তখন উক্ত প্রান্তর তাদের নিয়ে ধসে যাবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৯৩৮ ]
হযরত কাতাদা রাযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন সিরিয়া হতে মক্কার দিকে একদল সৈন্য প্রেরণ করা হবে। যখন তারা খোলা প্রান্তরে পৌঁছবে তখন উক্ত খোলা প্রান্তর তাদের নিয়ে ধসে যাবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৯৩৯ ]
হযরত ইবনে মাসউদর রাযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণির্থ যে, তিনি বলেন একদল সৈন্য মদীনার উদ্দেশ্যে প্রেরণ করা হবে। দুই জাম্মা (এটি মদিনা থেকে ৩ মাইল দূরে অবস্থিত যা আকিকের নিকট অবস্থিত) এর মধ্যবর্তী স্থান তাদের নিয়ে ধসে যাবে। নিঃপাপ পবিত্র আত্মাকে হত্যা করা হবে.
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৯৪০]
হযরত আবু জা'ফর রাযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন তাদের নিয়ে ধসে যাবে (সৈন্যদল নিয়ে যমিন ধসে যাবে)। ফলে বিকারগ্রস্তদের থেকে দুই জন ব্যতীত তাদের কেই বাঁচবে না। তাদের দুই জনের নাম হল, ওয়াবার এবং ওয়াবির। তাদের দুই জনের চেহারাকে তাদের পশ্চাতের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৯৪১ ]
হযরত আলী রাযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন যখন ঐসমস্ত লোককে অনুসন্ধানের জন্য সৈন্য অবতরণ করবে যারা মক্কার উদ্দেশ্যে বের হয়েছে। তখন তারা (সৈন্যদল) একটি খোলা প্রান্তরে অবতরণ করবে (আর তখনই) উক্ত খোলা প্রান্তর তাদের নিয়ে ধসে যাবে। এবং তাদের শেষ করে দিবে।
আর আল্লাহ ত'আলার কথা (এই দিকে ইঙ্গিত করে) যদি তুমি দেখতে যখন তারা ভীত বিহ্বল হয়ে পড়বে। তখন কোন অব্যহতি থাকবে না। আর তাদেরকে নিকটবর্তী স্থান হতে (তাদের পায়ের নীচ থেকে) পাকড়াও করা হবে। (সূরা সাবাঃ ৫১)।
আর সৈন্যদল থেকে এক ব্যক্তি উটের সন্ধানে বের হবে। অতপর ফিরে আসবে। কিন্তু তাদের একজন কেও পাবে না। তাদের অনুভূতিও পাবে না (তাদের ঘ্রাণও পাবে না )। আর এই সেই ব্যক্তি যে মানুষের নিকট তাদের ব্যাপারে সংবাদ দিবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৯৪২ ]
হযরত কা'ব রাযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন বার হাজার সৈন্য বিশিষ্ট একটি সৈন্যদল মদীনার মুখি হবে। অতপর খোলা প্রান্তর তাদের নিয়ে ধসে যাবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৯৪৩]
হযরত যুহরী হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন কুফাবাসীদের থেকে দুটি সৈন্য দল পাঠানো হবে একটি সৈন্যদল পাঠানো হবে মারওয়ার দিকে। আরেকটি পাঠানো হবে হিজাজের দিকে। হেজাজের দিকে প্রেরিত সৈন্যদলের এক তৃতীয়াংশ (যমিনে) ধসে যাবে। আরেক এক তৃতীয়াংশ জন্তুতে পরিনত হবে।
তাদের চেহারা হবে তাদের দুই কাধের মাঝে (চেহারা থাকবে ডান কাধ বরাবর বা বাম কাধ বরাবর)। এভাবে যে, তারা তাদের যেমনিভাবে পশ্চাতভাগ দেখতে পাবে তেমনিভাবে তারা তাদের সম্মুখভগাও দেখতে পাবে। তারা তাদের পায়ের গোড়ালি দিয়ে পিছন দিকে হাটবে। যেমনিভাবে তারা পায়ের সামনের ভাগ দিয়ে হাটতো (সম্পূর্ণ উল্টা হাটবে)। আর তাদের থেকে এক তৃতীয়াংশ বাকী থাকবে। তারা মক্কার দিকে যাবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৯৪৪ ]
হযরত আবু জা'ফর রাযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন যখন সুফইয়ানী পৌছবে এবং নিস্পাপ লোককে হত্যা করবে। আর সে হল ঐ ব্যক্তি যার ব্যাপারে ঘটনা লিপিবদ্ধ হয়েছে। অতপর সকল মুসলমান রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর হারাম তথা মদীনা হতে আল্লাহ তা'আলার হারাম তথা মক্কা নগরীতে ভেগে যাবে।
অতপর যখন তার নিকট তাদের পালায়নের খবর পৌছবে তখন সে মদীনার উদ্দেশ্যে এক সৈন্য দল প্রেরণ করবে। যাদের নেতা হবে উন্মাদদের মধ্যে থেকে একজন। যখন তারা খোলা প্রান্তরে পৌছবে তখন যমিন তাদের নিয়ে ধসে যাবে। আর তাদের নেতা পালিয়ে যাবে। তারা উল্লেখ করেন যে, উক্ত আমীর হবে মাযহিজ থেকে। আবার কতিপয় রাবী বলেন উক্ত নেতা হবে বনু কালব থেকে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৯৪৫]
হযরত আবু জা'ফর রাযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন তাদের থেকে কালবী দুই জন ব্যক্তি ব্যাতীত আর কেই বাচতে পারবে না। যে দুই জনের নাম হবে ওয়াবার এবং ওয়াবির। তাদের দুইজনের চেহারা তাদের পিছনের দিকে ঘুরে যাবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৯৪৬ ]
হযরত আবু কুবাইল রাযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন সুসংবাদ দানকারী ও সতর্ককারী ব্যাতীত তাদের থেকে কেউ বাঁচতে পারবে না (সুসংবাদ দানকারীর) সুসংবাদ হল যে, ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম ও তার সাথীরা মক্কায় আসবে। অতপর ঐ ব্যক্তি তাদের সাথে যা ঘটেছে সে ব্যাপারে মানুষকে সংবাদ দিবে।
তার কথার সত্যতার প্রমান তার চেহারায় থাকবে। আর তা হল তার চেহারা তার পিছনের দিকে ঘুরে যাবে। ফলে মানুষ যখন তার ঘোরানো মাথা দেখবে তখন তার কথা সত্য হিসাবে মেনে নিবে। আর তারা জানবে যে, কওম বা জাতিকে নিয়ে যমিন ধসে গেছে।
আর দ্বিতীয়টি হল তার অনুরূপ তার চেহারাও পিছন দিকে ঘোরানো থাকবে। সুফিয়ানী আসবে অতপর সে তার সাথীদের উপর আল্লাহ তা'আলা কি নাযিল করেছেন তা সম্পর্কে সংবাদ দিবে। যখন মানুষ তার মধ্যে আলামত দেখবে তখন তার কথা সত্য হিসাবে মেনে নিবে। আর জানবে যে, সে সত্য। আর তার উভয় ব্যাক্তি হবে বনু কালব হতে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৯৪৭]
হযরত আব্দুল্লাহ রাযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন আল্লাহ তা'আলা বলবেন হে খালি প্রান্তর! তুমি তোমার অধিবাসী সহ ধসে যাও। ফলে উক্ত প্রান্তর তার অধিবাসী সহ ধসে যাবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৯৪৮ ]
হযরত আরতাত রাযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন একজন ব্যক্তি ব্যাতীত আর কেউ তাদের থেকে বেচে থাকবে না। আল্লাহ তা'আলা তার চেহারাকে তার পিছনের দিকে ঘুরিয়ে দিবেন। সে (উল্টা দিকে) হাটবে যেমন সে পূর্বে তার সামনের দিকে সোজা ভাবে হাটতো।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৯৪৯ ]
Comments 0