আব্বাসীয় শাসনামল পতন এবং আসমানী নিদর্শনের বর্ননা-কিতাবুল-ফিতান
আব্বাসীয় শাসনামল পতন এবং আসমানী নিদর্শনের বর্ননা-কিতাবুল-ফিতান
হযরক কা'ব রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, বনু আব্বাসের রাজত্ব পতন হওয়ার অন্যতম লক্ষণ হচ্ছে, আসমানের বুকে এক প্রকার লাল বর্ণের আত্মপ্রকাশ করা এবং সেটা রমাযানের দশ তারিখ থেকে পনের তারিখ পর্যন্ত স্থায়ী হবে।
আরেক ধরনের জীর্ণতা দেখা দিবে যা বিশ রমাযান প্রকাশিত হয়ে চব্বিশ রমাযান পর্যন্ত থাকবে। একটি তারকা উদিত হবে যেটা পূর্নিমার রাত্রির মত উজ্জ্বল হয়ে হঠাৎ বাঁকা হয়ে যাবে।
হাদীস বর্ণনাকার ওলীদ বলেন, আমার নিকট হযরত কা'ব থেকে সংবাদ এসেছে, তিনি বলেন, পূর্বদিকের এলাকায় দুর্ভিক্ষ দেখা দিবে, পশ্চিমে জীর্ণতা প্রকাশ পাবে, আসমানে লালিমা দৃশ্যায়ন হবে এবং কেবলার দিকে ব্যাপকহারে মানুষ মারা যাবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৬২২ ]
হযরত আবু জাফর রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি এরশাদ করেন, যখন বনু আব্বাছে রাজত্বের বিস্তৃতি খোরাসান পর্যন্ত গিয়ে পৌঁছবে তখন পশ্চিমাকাশে আলোকিত একটি শিং জাতীয় বস্তু প্রকাশ পাবে।
এমন আলামত নূহ আঃ এর কওমকে পানিতে ডুবিয়ে মারার আগেও পাওয়া গিয়েছিল। তেমনিভাবে হযরত ইবরাহীম আঃ কে নমরূদ কর্তৃক আগুনে নিক্ষেপ করার আগেও প্রকাশ পেয়েছিল। যখন আল্লাহ তাআলা ফেরআউনকে তার দলবলসহ ধ্বংস করেছিলেন। তখনও সেটা উদিত হয়েছিল, হুবহু সেটা দেখা গিয়েছিল যখন ইয়াহইয়া ইবনে যাকারিয়া আঃ কে শহীদ করা হয়েছিল।
সুতরাং তোমরা সেই তারাটি দেখতে পেলে যাবতীয় ফেৎনার অনিষ্টতা থেকে আল্লাহ তাআলার দরবারে পানাহ চাও। সেই তারকাটি উদিত হয়েছিল, চন্দ্র-সূর্য গ্রহন নেয়ার পর। তারপর আর বেশিদিন অপেক্ষা করতে হয়নি,এক পর্যায়ে মিশরে আরকা'বাহিনীর আবির্ভাব হয়ে যায়।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৬২৩ ]
হযরত ইবনে শিহাব যুহরী রহঃ কর্তৃক বর্ণিত, তিনি এরশাদ করেন, সুফিয়ানীর আগমনের পরপর আসমানে বিভিন্ন ধরনের আলামত দেখতে পাবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৬২৪ ]
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযিঃ হতে বর্ণিত, তিনি এরশাদ করেন, সফর মাসে নিদর্শন প্রকাশ পাওয়ার পর আসমানে একাধিক লেজ বিশিষ্ট তারকা উদিত হবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৬২৫ ]
হযরত আব্দুল গাফফার রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি সুফিয়ান আল কালব্বী থেকে বর্ণনা করেন, এরশাদ হচ্ছে, সপ্তম মাসে বিভিন্ন বালা-মসীবত দেখা দিবে, অষ্টম মাসে সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে এবং নবম মাসে ব্যাপক দুর্ভিক্ষ আসবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৬২৭ ]
হযরত আবু হুরায়রা রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাঃ থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ এরশাদ করেন, রমাযান মাসে একটি আলামত প্রকাশিত হবে। এরপর শাওয়াল মাসে এক দলের আত্মপ্রকাশ হবে। অতঃপর জিলক্বদ মাসে ব্যাপক বালা-মসিবত দেখা দিবে, জিলহজ্ব মাস আসলে হাজীদের রসদপত্র ছিনতাই করে নেয়া হবে।
মুহারম মাসে সকলের সম্মানের উপর চরম আঘাত করা হবে, অতঃপর সফর মাসে বিকট এক আওয়াজ শুনা যাবে, এরপর রাবিউল আওয়াল ও রবিউসসানী মাসদ্বয়ে বিভিন্ন গোত্রের মধ্যে ঝগড়া-ফাসাদ হবে। রজব এবং জুমাদাল উলা ও জুমাদিউল উগ্রা মাসে অতি আশ্চর্য বিষয় আত্মপ্রকাশ করবে।
এরপর তিনি বলেন, হাওদা বোঝাই উট বিনোদন সামগ্রী বোঝাই লক্ষ উটের চেয়ে উত্তম। আবু আব্দুল্লাহ নুআঈম রহঃ বলেন, আমি জানিনা, তবে শুনেছি মাসলামা ইবেন আলীর কাছ থেকে ইনশাআল্লাহ! তার এবং কাতাদাহ এর মাঝে মাত্র একজন লোক রয়েছে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৬২৮ ]
হযরত সাঈদ ইবনুল মুসাইয়্যাব রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মুসলমানদের কাছে এমন এক যুগ আসবে যখন রমাযান মাসে বিকট আওয়াজ শুনা যাবে, শাওয়াল মাসে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের আবির্ভাব হবে, জিলকদ্ব মাসে এক গোত্রের লোকজন অন্য গোত্রের উপর হামলে পড়বে। জিলহজ্ব মাসে হাজী সাহেবদের যাবতীয় রসদপত্র ছিনিয়ে নেয়া হবে। মুহাররম মাস সম্বন্ধে কি বলব; মুহাররম মাস, যেটা সম্বন্ধে কিই বা বলার আছে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৬২৯ |
হযরত শহর ইবেন হাওশব রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমাদের কাছে সংবাদ পৌঁছেছে, রাসুলুল্লাহ সাঃ এরশাদ করেন, রমাযান মাসে বিকট আওয়াজ প্রকাশ পাবে, শাওয়াল মাসে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় দেখা যাবে। জিলকদ মাসে বিভিন্ন গোত্রের মাঝে যুদ্ধ হবে। জিলহজ্ব মাসে হাজীদের সম্পদ ছিনিয়ে নেয়া হবে। মহররম মাসে আসমানে এক ঘোষক ঘোষণা করবে, শুনে রাখ, নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাআলার অকৃত্রিম বন্ধু হচ্ছে এমন লোক যার পিছনে অমুক ব্যক্তি রয়েছে । সুতরাং তোমরা তার কথা শুনো এবং অণগত কর ।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৬৩0 ] -
আমর ইবনে শুআইব, স্বীয় পিতা এবং দাদা থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ এরশাদ করেন, . রমাযান মাসে বিকট আওয়াজ শুনা যাবে, শাওয়াল মাসে যোদ্ধাদের হুংকার চলবে, জিলকদ মাসে বিভিন্ন গোত্রের মাঝে যুদ্ধ বাঁধবে। সেই বৎসরই হাজীদের রসদপত্র ছিনতাই করা হবে, এবং মিনার ময়দানে ভয়াবহ যুদ্ধ সংঘটিত হবে। যার মধ্যে ব্যাপক গন হত্যা ও রক্তপাত হবে। সে অবস্থায় তারা আকাবাতুল জামাবায় থাকবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৬৩১ ]
হযরত আব্দুল্লাহ ইবেন আমর ইবনুল আস রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সকলে একসাথে হজ্ব করবে, অন্য এক ইমামের উপর সকলে পরিচিত হবে। তারা এমন অবস্থায় থাকাকালীন তারা যখন মিনায় পৌঁছবে হঠাৎ তাদেরকে কুকুরের ন্যায় আটক করা হবে। ফলে একগোত্র অন্য আরেক গোত্রের উপর প্রাধান্য বিস্তার করতে গিয়ে যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে যাবে। যার কারণে গোটা আকাবা রক্তে রঞ্জিত হয়ে যাবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৬৩২ ]
হযরত খালেদ ইবেন মা'দান রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, অতিসত্ত্বর পূর্বদিক থেকে আগুনের তৈরি পিলারের ন্যায় এক নিদর্শন প্রকাশ পাবে। যেটা জমিনের সকলে দেখবে। তোমাদের কেউ এমন যুগ প্রাপ্ত হলে, সে যেন তার পরিবারের জন্য এক বৎসরের খোরাকী প্রস্তুত রাখে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৬৩৩ ]
হযরত কাসির ইবেন মুররা আল হাজরনী রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রমাযান মাসে আসমানে বিভিন্ন আলামত প্রকাশ পেতে থাকলে মানুষের মাঝে ব্যাপক এখতেলাফ দেখা দিবে । ভূমি এমন অবস্থা প্রাপ্ত হলে তোমার সাধ্যানুযায়ী খাবারের মজুদ করে রাখ ।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৬৩৪ ]
হযরত ইবেন শিহাব যুহরী রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, দ্বিতীয় সুফিয়ানীর রাজত্ব এবং তার আবির্ভাবের মধ্যে এমন কতক আলামত রয়েছে, যা তুমি আকাশে দেখতে পাবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৬৩৫ ]
হযরত আব্দুল্লাহ ইবেন মাসউদ রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ এরশাদ করেছেন, যখন রমযান মাসের বিকট আওয়াজ প্রকাশিত হবে,শাওয়াল মাসে, যুদ্ধের ঝংকার শুনবে, জিলকদ মাসে বিভিন্ন গোত্রের মাঝে মতপার্থক্য দেখা দিবে, জিলহজ্ব মাসে রক্তপাত হবে। মুহাররম মাসে, মুহাররম কি? সে মাসে বিভিন্ন ধরনের মারামারি, হানাহানি, ঝগড়া-ফাসাদ চলতে থাকবে। একথাটি তিনি তিনবার বলেছেন।
তিনি বলেন, আমরা বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! যায়হাহ্ কি? জবাবে রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন, এটা অর্ধরমাযান মাসের জুমার রাত্রে প্রকাশ পাবে। যার কারণে ঘুমন্ত ব্যক্তিরা জাগ্রত হয়ে যাবে, দাড়ানো অবস্থায় থাকা লোকজন বসে যাবে, কুমারী নারীগন ভয়-আতঙ্কে পর্দার ভিতর থেকে বেরিয়ে আসবে। এটা হবে এক জুমার রাত্রিতে, এমন এক বৎসর যখন অধিকহারে ভুমিকম্প হবে।
সুতরাং তোমরা জুমার দিন নামায আদায় করার সাথে সাথে ঘরে প্রবেশ করে দরজা-জানালা লাগিয়ে দিবে। নিজেদেরকে চাদরাবৃত করলেও কানকে সজাগ রাখবে। যখনই বিকট কোনো আওয়াজ শুনতে পাবে তখনই আল্লাহর দরবারে সেজদাবনত হয়ে যাবে এবং সুবহানাল কুদ্দুছ, সুবহানাল কুদ্দুছ বলতে থাকবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৬৩৮ ]
ওয়ালিদ হতে বর্নিত, তিনি বলেন, রমযান মাসের কিছু দিন অতিবাহিত হওয়ার পর আমরা দিমাশ্ববাসীদের উপর এক ধরনের ভুমিকম্প হতে দেখলাম| যদ্বারা ১৩৭ হিজরী সনের রমযান মাসে অনেক লোক মৃত্যু বরন করে। তবে খুরাস্তা নগরীতে যে ভূমিধসের কথা প্রসিদ্ধ রয়েছে আমরা দেখিনি। কিন্তু এক ধরনের লেজ বিশিষ্ট তারকা, যেটা ১৪৫ হিজরী সনের মুহাররম মাসে পূর্ব দিকে ফজরের সময় উদিত হয়েছিল, সেটা আমি দেখেছি।মুহাররমের কয়েকদিন বাকি থাকতে ফজরের পূর্ব মুহুর্তে সেটাকে দেখা গিয়েছিল, এরপর দ্রুত আবার গায়েব হয়ে যায়।
এরপর সূর্য অস্ত যাওয়ার পর পশ্চিমাকাশে আবারো সেটাকে আমরা দেখতে পাই। অতঃপর ফুরাত নদী এবং তার পার্শ্বে খালি সহানে প্রায় দীর্ঘ দুই-তিন মাস পর্যন্ত দেখা যায়। আর দুই- তিন বৎসর পর্যন্ত দেখা যায়নি। পরে আমরা আরো একটি আলোযুক্ত ছোট্ট তারকা দেখতে পেলাম,যা প্রায় এক হাত পর্যন্ত আলো ছড়ায়। যার চতুর্পার্শ্বে বিভিন্ন তারকা ঘুরতে থাকে। সেটা অবশ্যই জুমাদিউল উলা, জুমাদিউল উখরা এবং রজব মাসের কিছুদিন পর্যন্ত নিয়মিত উদিত হতে থাকে,এরপর আর দেখা যায়নি।
কিছুদিন পর আমরা আরেকটি তারকা দেখতে পেলাম, যা তেমন উজ্জল ছিলনা। সেটা মূলতঃউদিত হয়েছিল শাম দেশের ডান পার্শ্বে। ধীরে ধীরে তার আলো শাম থেকে জওফ এবং আরমেনিয়া পর্যন্ত ছড়াতে থাকে। উক্ত ঘটনাটি আমাদের মাঝে অলিগলি ও কক্ষপর্যন্ত সম্বনেধ অভিজ্ঞ লোককে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন,সে তারকাটি ঐ তারকার অন্তর্ভুক্ত নয়,যার জন্য আমরা অপেক্ষমান।
বর্ননা কারী বলেন,আবু জাফরের হুকুমতের কয়েক বৎসর বাকি থাকতে আরেকটি তারকা দেখতে পায়।অতঃপর সেটা ধীরে ধীরে বাঁকা হতে থাকে, এক পর্যায়ে রাত্রের কিছু অংশে তার উভয় পার্শ্ব মিলিত হয়ে বেড়ির মত হয়ে যায়।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৬৩৯ ]
ওলিদ বলেন হযরত কা'ব রহঃ এরশাদ করেন সেটা ঐ তারকার অন্তর্ভুক্ত, যা পূর্বাকাশে প্রকাশ পাবে এবং পূর্নিমার রাত্রের চন্দ্রের ন্যায় গোটা বিশ্বকে আলোকিত করে দিবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৬৪০]
ওলিদ রহঃ বলেন,আমরা যে লালিমা এবং তারকা দেখতে পেয়েছি,সেটা কিন্তু কিয়ামতের নিদর্শন নয়,বরং তারকা সম্বলিত আলামত হচ্ছে, যা সফর রবিউল আওয়াল, রবিউসসানী এবং রজব মাসে পৃথিবীর বভিন্ন স্থানে দেখা যাবে। ঐ সময় খাকান বাদশাহ তুর্কিদের দিকে ভ্রমন করবে এবং রুমবাসীরা ঝান্ডা ও ক্রুস সহকারে তার অনুস্বরন করতে থাকবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৬৪১ ]
ওলীদ রহঃ কা'ব রহঃ হতে বর্ননা করেন, তিনি বলেন, হযরত মাহদি আঃ এর আগমনের পূর্বে পূর্বাকাশে জুলফি বিশিষ্ট একটি তাঁরকা উদিত হবে। তিনি বলেন আমি শরীফ রহঃ থেকে বর্ননা করেছি, তিনি বলেন, আমার কাছে সংবাদ পৌঁছেছে,হযরত মাহদি আঃ এর আগমনের পূর্বে রমাযান মাসে মোট দুইবার সূর্য গ্রহন হবে ।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৬৪২ ]
কা'ব রাঃ থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, বনু আব্বাসের ধ্বংস হবে, একটি এমন তারকার সময়, যা মধ্যবর্তি স্থানে প্রকাশ পাবে। অতঃপর বিভিন্ন ধরনের দূর্বলতা ও বিশৃঙ্খলা দেখা দিবে। এসব কিছু হবে মূলতঃ রমযান মাসে। লালিমা প্রকাশ পাবে রমাযান মাসের পাঁচ তারিখ বিশ তারিখের মধ্যে।
আর বিকট শব্দ প্রকাশ হবে রমাযানের পনের তারিখ থেকে বিশ তারিখের মধ্যে আর দুর্বল ও রুগ্নতার আবির্ভাব হবে বিশ রমাযান থেকে চব্বিশ রমাযানের মধ্যবর্তি সময়ের মধ্যে।
অতঃপর এমন একটি তারকা উদিত হবে, যার আলো হবে চন্দ্রের আলোর ন্যায়।এরপর উক্ত তারকা সাপের ন্যায় কুন্ডুলি পাকাতে থাকবে। যার কারনে তার উভয় মাথা একটা আরেকটার সাথে মিলিত হওয়ার উপক্রম হবে। এক পর্যায়ে সেটা পূর্বাকাশে গিয়ে পতিত হবে। যাদ্বারা মানুষ বিভিন্ন ধরনের বালা-মুসিবতের দীর্ঘকার রাত্রে দুইবার ভুমিকম্প হবে এবং আসমান থেকে জমিনের দিকে যে তারকাটি নিক্ষিপ্ত হবে,তার সাথে থাকবে বিকট আওয়াজ।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৬৪৩] -
মুহাদ্দিস আবুল হওসা রহঃ বিশিষ্ট তাবেঈ হযরত তাউস রহঃ থেকে হাদীস বর্ননা করেন,তিনি বলেন, অতিসত্ত্বর তিন ধরনের ভূমিকম্প সংঘটিত হাবে। ইয়ামানে মারাত্মক ভূমিকম্প দেখা দিবে, শামদেশে এর চেয়েও কঠিন ভূমিকম্প সংঘটিত হবে। আরেকটি কম্পন হবে মাশরিকের দিকে।সেটিই হবে মূলতঃ সমূলে নিপাতকারী। অন্য বর্ননা দ্বারা বুঝা যায়, ইয়ামান এবং শামে ভুমিকম্প হবে, মাশরিকে নয়।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৬৪৪ ]
সাহাবী হযরত আবু হুরায়রা রাযিঃ হতে বর্নিত, তিনি বলেন, রমাযান মাসে এমন বিকট আওয়জ প্রকাশ পাবে, যাদ্বারা ঘুমন্ত লোকজন জাগ্রত হয়ে যাবে এবং কুমারী নারীগন পরদা ছেড়ে বেরিয়ে পড়বে। শাওয়াল মাসে মহামারি দেখা দিবে। জিলক্বদ মাসে একগোত্র আরেক গোত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়িয়ে যাবে। এবং জিলহজ্ব মাসে পরস্পরের মাঝে খুন-খারাপি দেখা দিবে।
অতঃপর মুহারম মাসে,মুহারর্ম কি!এভাবে তিনবার উচ্চারন করার পর বললেন মুহাররম মাস হচ্ছে,তৎকালীন রাজা-বাদশাহদের রাজত্ব খতম হয়ে যাওয়ার মাস।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৬৪৫ ]
হোজায়ফা ইবনুল ইয়ামান রাযিঃ থেকে বর্নিত, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাঃ এরশাদ করেছেন,নিঃসন্দেহে আমার উম্মত ধ্বংস হবে না, যতক্ষন পর্যন্ত তাদের মধ্যে তামাউয, তামাউল এবং মাআমু প্রকাশ পাবেনা। হোজায়ফা রাযিঃবলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ তামাউয কি জিনিস? উত্তরে তিনি বললেন, আমি দুনিয়া থেকে চলে যাওয়ার পার ইসলামের ক্ষেত্রে মানুষের মাঝে যে স্বজনপ্রীতি প্রকাশ পাবে সেটাই হচ্ছে, তামাউয।
অতঃপর আমি “তামাউল” সম্বন্ধে জানতে চাইলে তিনি বললেন, এক গোত্র আরেক গোত্রের বিরুদ্ধে এমনভাবে লেলিয়ে পড়বে, যা তারা মনে করবে।
এরপর আমি মাআমু সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে রাসূলুল্লাহ সাঃ এরশাদ করেন, মাআমু হচ্ছে, এক শহরের লোকজন অন্য শহরের প্রতি যুদ্ধ করার জন্য ধেয়ে আসবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৬৪৬ ]
হযরত কাসীর ইবনে মুররা রহঃ হতে বর্নিত, তিনি বলেন, ফেৎনার সূচনা লক্ষন সমূহ প্রকাশপাবে মূলতঃ রমযান মাসে, তীব্র আকার ধারন করবে শাওয়াল মাসে। জিলকদ মাসে এক এলাকার লোকজন আরেক এলাকর দিকে ধাবিত হবে এবং জিলহজ্ব মাসে এক শহরের বাসিন্দাগন অন্য শহরের বাসিন্দাদের প্রতি যুদ্ধের লক্ষে ধেয়ে আসবে। এসব কিছুর চূড়ান্ত নিদর্শন হচ্ছে, আকাশে আলোকিত-উজ্জ্বল কোনো পিলার প্রকাশ পাওয়া।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৬৪৭ ]
আরতাত রহঃ থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, দ্বিতীয় সুফিয়ানীর যুগে নিকৃষ্ট চরিত্রের কিছু লোকের আবির্ভাব ঘটবে এবং শামের দিকে বিভিন্ন ধরনের ফেৎনা প্রকাশ পাবে। এক পর্যায়ে প্রত্যেকে মনে করবে, যে তার পার্শ্ববর্তি এলাকার লোকজন থেকে বেশি খারাপ অবস্থায় রয়েছে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৬৪৮ ]
ইবেন মা'দান রহঃ থেকে বর্নত, তিনি বলেন, যখন তোমরা আকাশে রমাযান মাসে মাশরেক থেকে আগুনের কিছু পিলার প্রকাশ পেতে দেখবে, তখন সাধ্যমত খাবার জোগাড় করে রাখবে।কেননা তার পরবর্তী বৎসর হচ্ছে দুর্ভিক্ষের বৎসর।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৬৪৯]
হযরত কাসীর ইবনে মুররা হাজরামী রহঃ থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, আমি দীর্ঘ সত্তর বৎসর যাবত রমযান মাসে ফিনা প্রকাশ পাওয়ার রাত্রের অপেক্ষায় প্রহর গুনছি। হযরত আব্দুর রহমান ইবেন যুবায়ের রহঃ বলেন, যখনই আকাশে এধরনের কোনো আলামত প্রকাশ পাবে সাথে সাথে মানুষের মাঝে বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে থাকবে। যদি তুমি সে অবস্থার সম্মুখিন হও তাহলে সাধ্য অনুযায়ী খাবার জোগাড় করে রাখবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৬৫০ ]
কসীর ইবনে মুররা থেকে বর্নিত, তিনি এরশাদ করেন, ফিনার সূচনা হবে রমযান মাস থেকে, মারাত্নক গোলযোগ হবে শাওয়াল মাসে, অন্য শহরের উপর হামলে পড়বে জিলকদ মাস আসলে, চূড়ান্ত লড়াই শুরু হয়ে যাবে জিলহজ্ব মাসে এবং ফায়সালা হবে মুহাররম মাসে। অতঃপর তিনি বলেন, আমি দীর্ঘ সত্তর বৎসর থেকে এমন ফিৎনার সূচনা দেখতে অপেক্ষায় আছি।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৬৫৩ ]
খালেদ ইবনে ইয়াযিদ ইবনে মোয়াবিয়া রহঃ থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, যখন তুমি মানুষকে নিজের সিদ্ধান্তের উপর পুরোপরি সন্তুষ্ট হয়ে আশ্চর্য প্রকাশ করতে দেখবে, তখন মনে করবে তার লাঞ্চনা অবধারিত।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৬৫৪ ] [ শুআবুল ঈমান লিল বায়হাকিঃ ৭৯৩৮ ]
Comments 0