ফিতনার স্থান প্রসঙ্গে-কিতাবুল-ফিতান
ফিতনার স্থান প্রসঙ্গে-কিতাবুল-ফিতান
আম্মার ইবনে ইয়সির রাযিঃ থেকে বর্নিত তিনি বলেন, যখন তুমি শামবাসীকে হযরত মোয়াবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ান রাযিঃ এর নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হতে দেখবে তখন তোমরা মক্কার দিকে ধাবিত হতে থাকো।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৬৯৮ ]
খলীফা হযরত আলী রাযিঃ থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, যখন সুফিয়ানীরা বিজয়ী হতে থাকবে, তখন উক্ত বালা মুসিবত থেকে অবরুদ্ধ কালীন ধৈর্যশীলরা ছাড়া অন্য কেউ মুক্তি পাবেনা।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৬৯৯ ]
সাঈদ ইবনে মুহাজির আলওসসাবী কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, যখন মাগরিবের পক্ষ থেকে ফিতনা আসতে থাকবে তখন তোমরা ইয়ামেনের দিকে যাত্রা করতে থাকো, কেননা উক্ত ফিতনা থেকে তোমাদেরকে পৃথিবীর অন্য কোনো দেশ রক্ষা করতে পারবেনা।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৭০০ ]
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাযিঃ থেকে বর্নিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাঃ থেকে বর্ননা করেন, তিনি বলেন, যখন পশ্চিম দিক থেকে ফিৎনা প্রকাশ পাওয়ার পাশাপাশি পূর্বদিক থেকেও ফিনা আসতে থাকে তখন তোমরা শাম দেশে গিয়ে আত্নরক্ষা কর । ঐ মূহুর্তে জমিনের নিচের অংশ উপরিভাগ থেকে অনেক উত্তম।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৭০১ |
কা'ব রহঃ থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, জমিনের পেট তখন পিঠের চেয়ে অনেক উত্তম হবে উপরের অংশ থেকে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৭০২ ]
সাহাবী হযরত আবু হুরায়রা রাযিঃ থেকে বর্নিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাঃ হতে বর্ননা করেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ এরশাদ করেন যখন পূর্ব-পশ্চিম উভয় দিক থেকে ফিৎনা আসতে থাকবে তখন সে ফিৎনা থেকে কেউ বাঁচতে পারবেনা, তবে ঐ লোকের বাঁচার আশা করা যায়, যে খুবই গোপনীয়তার সাথে জীবন যাপন করে।
জনসমক্ষে আসলেও কেউ চিনতে পারেনা, কোথাও বসার পর উঠে চলে গেলে তাকে খোঁজা হয়না। আর ঐ ব্যক্তির মুক্তির আশা করা যায়, যে, পানিতে ডুবন্ত মানুষের ন্যায় শেষ আর্তনাদ হিসেবে ক্ষিনস্বরে সাহায্যের আকুতি জানাতে থাকে। এ দুই দল ব্যতীত অন্য কেউ বাঁচতে পারবেনা।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৭০৩ ]
কা'ব রহঃ থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, যখন চতুর্দিক থেকে ফিৎনা ধেয়ে আসবে তখন তুমি শীতকালীন পিঁপড়ার ন্যায় নিজের আত্মরক্ষার জন্য একটি স্থান খুঁজতে থাক। তবে সেটা হতে হবে অত্যন্ত গোপনীয়তার সাথে। বিন্দু মাত্রও প্রকাশ পেতে পারবেনা। এধরনের ফিৎনা থেকে আত্নরক্ষার সর্বোত্তম স্থান হচ্ছে, মদীনা হেজাজ এবং তার পার্শ্বের অন্যান্য এলাকা খুবই উত্তম অন্য এলাকা থেকে
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৭০8 ]
নজীব ইবনে সারী রহঃ বলেন, একদিন সায়্যিদুনা হযরত ঈসা আঃ খলীল পাহাড়ের নিকটে গিয়ে সেখানের বাসিন্দাদের জন্য তিন ধরনের দোয়া করতে গিয়ে বলেন, হে আল্লাহ! এ এলাকায় ভীতসন্ত্রস্থ হয়ে কেউ আসলে যেন এখানে নিরাপদ থাকে এবং উক্ত এলাকার বাসিন্দাদের উপর যেন কখনো চতুস্পদ জন্তকে চাপিয়ে দেয়া না হয়। আর পৃথিবীতে দূর্ভিক্ষ দেখা দিলেও যেন এ এলাকায় দূর্ভিক্ষ দেখা না যায় ।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৭০৫ ]
ওজীন ইবনে আতা রহঃ থেকে বর্নিত, রাসূলুল্লাহ সাঃ এরশাদ করেছেন, খলীল পাহাড়টি খুবই সম্মানিত পাহাড়। বনী ইসরাঈলের মধ্যে কোনো এক সময় মারাত্মক কোনো ফিৎনার আশংকা দেখা দিলে আল্লাহ তা'আলা তৎকালীন নবীদের প্রতি ওহি পাঠালেন যে, তোমরা তোমাদের দ্বীনের হেফাজত করতে হলে খলীল পাহাড়ের নিকট গিয়ে আত্নরক্ষা করতে থাকো।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৭০৬ ] [ তাহযিবুত তাহযিবঃ ১২/১২১ ]
আবু যর গিফারী রাযিঃ হতে বর্নিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাঃ থেকে বর্ননা করেন, তিনি এরশাদ করেন, পৃথিবীতে সর্বপ্রথম মিশর এবং ইরাক ধ্বংস হয়ে যাবে। হে আবু যর! যখন তুমি দেখতে পাবে, বাতিঘরের উচ্চতা সিলা পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে তাহলে শাম দেশকে আকড়িয়ে ধরবে।
আমি বললাম, যদি তারা আমাকে যেখান থেকে বের করেও দেয় তাহলেও কি আমি সেখানে যাবো? জবাবে রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন, তোমাকে তারা যেখানে তাড়িয়ে নিয়ে যায় সেখানে চলে যেতে সংকোচবোধ করোনা।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৭১০ ]
কা'ব রহঃ থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, হিমস এলাকার শহীদগন সত্তর হাজার মানুষের জন্য সুপারিশ করবেন, অন্যদিকে দিমাশক বাসীদেরকে আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন সবুজ কাপড় পরিধান করাবেন। জর্ডানের অধিবাসীদেরকে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা'আলা তার আরশের নিচে ছায়া দান করবেন। ফিলিস্তিন বাসীদের প্রতি আল্লাহ তা'আলা প্রত্যেকদিন তিনবার করে দৃষ্টি দেন।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৭১১ ]
কাসীর ইবনে মুররা থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ এরশদ করেছেন,শাম দেশে ইসলামের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে। আল্লাহ তা'আলা তার বান্দাদের থেকে যারা উৎকৃষ্ট মানের তাদেরকে সেদিকে ধাবিত করবেন। একমাত্র বঞ্চিত লোকদেরকেই সেখান থেকে বিতাড়িত করবেন। শামদেশের প্রতি আল্লাহ তা'আলার বিশেষ দৃষ্টি নিবন্ধিত থাকে। যাদ্বারা সেখানে ছায়া-বৃষ্টি সবকিছু যথাযথ ভাবে পাওয়া যায়। তারা সম্পদশালী না হলেও কখনো রুটি এবং পানির জন্য কষ্ট পাবেনা।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৭১২ ]
শুরাইহ ইবনে উবাইদ রহঃ থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, একদিন হযরত মোয়াবিয়া রাযিঃ কা'ব রাঃ কে হিমস এবং দিমাশক সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জবাব দিলেন, দিমাশক হচ্ছে, রোম দেশের মুসলমানদের আশ্রয়স্থল সেখানের ষাঁড় রাখার স্থান হিমসের বড় এলাকার চেয়েও উত্তম ।
কেউ যদি দাজ্জাল থেকে মুক্তির আশা করে সে যেন আবু ফাতরাছ নামক ঝর্নার পার্শ্বে গিয়ে আশ্রয় গ্রহন করে। যদি তুমি খুলাফাদের সমান মর্যাদা লাভ করতে চাও তাহলে দিমাশকে অবস্থান কর। আর যদি জিহাদ এবং কষ্ট শিকার করতে চাও তাহলে হিমস নামক এলাকাতে অবস্থান করতে থাক।
বর্ননাকারী সাফওয়ান বলেন, আমাদেরকে আবুজ জাহিরিয়্যাহ রহঃ হযরত কা'ব রাঃ থেকে বর্ননা করেন, যুদ্ধবিগ্রহ কালীন মুসলমানদের আশ্রয়স্থল হচ্ছে, দিমাশক । দাজ্জাল থেকে মুক্তির স্থান থেকে আবু ফাতরাছ ঝর্না আর তূর পাহাড় হচ্ছে, ইয়াজুজ-মাজুজ থেকে আশ্রয় গ্রহনের একমাত্র জায়গা ।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৭১৩ ]
কা'ব রহঃ থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, অন্ধকারাচ্ছন্ন রাত্রির মত তোমাদেরকে নানান ধরনের ফিত্না গ্রাস করে নিবে। মাশরিক মাগরিবের মুসলমানদের প্রতিটি ঘরে উক্ত ফিৎনা প্রবেশ করবে। কা'ব রহঃ এর কাছে উক্ত ফিৎনা থেকে মুক্তির উপায় জিজ্ঞাসা করলে জবাবে তিনি বলেন, একমাত্র তারাই মুক্তি পাবে যারা লেবানানের ছায়াতে গিয়ে আশ্রয় গ্রহণ করে। যেসব মুসলমান লেবানান এবং তার পার্শ্ববর্তী সমুদ্রের নিকটে গিয়ে অবস্থান করবে তারা উক্ত ফিনা থেকে নিরাপদে থাকবে। এভাবে চলতে চলতে যখন ১২২ হিজরী সন আসবে তখন আমার এবং অন্যান্য সকল ঘর ধ্বংস হয়ে যাবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৭১৪ ]
জমরা ইবনে হাবীব থেকে বর্নিত, তিনি এরশাদ করেন, ধ্বংসকারী ফিৎনা থেকে মুক্তি পাবে একমাত্র হেজাজ এবং নদীর পার্শ্বে অবস্থান কারী লোকজন।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৭১৫]
আবুজ জাহিয়্যাহ রহঃ কাসীর ইবনে মুররা থেকে বর্ননা করেন, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ এরশাদ করেছেন, নিঃসন্দেহে শাম দেশ ইসলাম এবং মুসলমানদের জন্য একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থল। তিনি একথাটি তিনবার বলেন।
আল্লাহ তা'আলা তার বান্দাদের থেকে যারা উৎকৃষ্ট মানের রয়েছেন তাদেরকে শাম দেশের দিকে নিয়ে যাবেন। বঞ্চিত লোকজনই শামদেশের সাথে দুরত্ব বজায় রাখবে আর ফিৎনা বাজরাই শাম দেশকে উপেক্ষা করবে। উক্ত দেশের প্রতি ছায়া দান এবং বৃষ্টি বর্ষনের ক্ষেত্রে পৃথিবীর সূচনা লগ্ন থেকে কিয়ামত পর্যন্ত আল্লাহ তা'আলার সুদৃষ্টি থাকবে। সেখানের বাসিন্দাদের কাছে টাকা-পয়সা না থাকলেও কখনো রুটি-পানির কষ্ট অনুভব করবেনা।
এমর্মে ইবনুজ জাহিরিয়্যাহ বলেন, আল্লাহ তা'আলা তার কিতাবে ঘোষনা দিয়েছেন, শাম দেশের চল্লিশ বৎসর পূর্বে পৃথিবীর অন্যান্য জনপদ ধ্বংস হয়ে যাবে। সেখানে কোনো প্রকার বিজলি ও বিকট শব্দে বাজ পতিত হবেনা, যা অন্যান্য দেশে হরহামেশা দেখা যাবে।
এক পর্যায়ে উক্ত শহরকে সেখানের বাসিন্দাদের জন্য প্রশস্থ করে দেয়া হবে, যেমন গর্ভের শিশুর জন্য মায়ের রেহেম বা বাচ্চা দানিকে প্রশস্থ করে দেয়া হয়।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৭১৬ ]
কা'ব রহঃ থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, আল্লাহ তা'আলার কাছে সবচেয়ে পছন্দনীয় স্থান হচ্ছে নারলিছ পাহাড়। কিয়ামতের পূর্বে মানুষের কাছে এমন এক যুগ আসবে যখন তারা সকলের বিভিন্ন ধরনের ফিৎনা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য উক্ত পাহাড়কে স্পর্শ করবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৭১৭ ]
সাহাবী হযরত মেকদাদ ইবনে মাদি কারাব রাযিঃ থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ এরশদ করেছেন, কিয়ামতের পূর্বে মানুষের মাঝে এমন এক যুগ আসবে যখন দিনার দেরহাম এবং টাকা-পয়সাই একমাত্র মানুষের উপকার করতে পৌঁছাতে পারবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৭১৮ ][ মুসনাদে আহমাদঃ ১৭২০১ ]
আব্দুর রহমান ইবনু যুবাইর রাঃ তার পিতা থেকে বর্ননা করেন, তিনি রাসূলুল্লাহ সাঃ থেকে বর্ননা করেন, তিনি এরশাদ করেন, যুদ্ধ বিগ্রহকালীন মানুষের আশ্রয়স্থলহবে দিমাশক নামক একটি শহর। গোতা নামক অন্য আরেকটি এলকায়ও লোকজন আশ্রয় গ্রহন করবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৭১৯ ]
আবু হোরায়রা রাযিঃ থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ এরশাদ করেছন, ফিৎনা কালীন সবচেয়ে উত্তম মানুষ হচ্ছে, পাক পবিত্রতা অবলম্বনকারী অপরিচিত লোক। যার অবস্থা হচ্ছে, প্রকাশ পেলেও কেউ তাকে চিনতে পারেনা, আর অনুপস্থিত থাকলে তার শুন্যতা অনুভব হয়না । পক্ষান্তরে নিকৃষ্টতম মানুষ হচ্ছে, বহুরুপি বক্তা এবং সর্বজন পরিচিত লোক।
উল্লিখিত ফিৎনা থেকে কেউ বাঁচতে পারবেনা, একমাত্র ঐ লোকের ব্যাপারে মুক্তির আশা করা যেতে পাতে, যিনি আল্লাহ তা'আলার দরবারে এখলাসের সাথে সমুদ্রে ডুবন্ত ব্যক্তির ফরিয়াদের ন্যায় ফরিয়াদ করতে পারবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৭২0 ]
সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস রাযিঃ থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ এরশাদ করেছেন, যখন ফিৎনা তীব্র আকার ধারন করবে তখন তোমরা সৎকাজকে মজবুত ভাবে আকড়িয়ে ধরবে এবং অসৎকাজ থেকে বিরত থাকবে। তোমাদের মাঝে যারা বিশেষ লোক রয়েছেন তাদের প্রতি মনোনিবেশ করবে এবং সর্বসাধারনকে এড়িয়ে চলবে ।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৭২১ ]
আবু সাঈদ খুদরি রাঃ থেকে বর্ণিত রাসুল বলেন, অচিরেই মানুষের সর্বোত্তম সম্পদ হবে তাদের বকরিগুলো, যা নিয়ে তারা পাহাড়ের চূড়ায় গমন করবে অথবা পাহাড়ের অভ্যন্তরে চলে যাবে অথবা বৃষ্টিময় স্থানে চলে যাবে ফিতনা থেকে তার দীনকে রক্ষা করার জন্য।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৭২১ ] [ সহিহ বুখারিঃ ৭০৮৮, ৩৩০০ ]
নোট: আর নিঃসন্দেহে এটাই সেই সময়। কিন্তু পার্থিব জীবনের ভালবাসা আমাদেরকে সেদিকে মনোযোগ দিতে দিচ্ছে না। আমরা আছি দুনিয়া কিভাবে অর্জন হবে। দীন নিয়ে আমাদের এই চিন্তা নেই বললেই চলে! এমতাবস্থায় আমার দীন কীভাবে রক্ষা হবে
হযরত আব্দুল্লাহ রাঃ থেকে বর্নিত তিনি বলেন, এমন এক সময় আসবে যখন মানুষের কাছে উত্তম সম্পদ হবে তার ঘোড়া এবং অস্ত্র। যার উভয়টা সর্বদা ছায়ার মত তার সাথে থাকবে। সে যেদিকে যাবে উভয়টাও সেদিকে যাবে। সে স্থীর থাকলে ঘোড়া ও অস্ত্রও স্থীর থাকবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৭২৪ ]
প্রসিদ্ধ সাহাবী হযরত উকবা ইবনে আমের রাযিঃ থেকে বর্নিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাঃ থেকে বর্ননা করেন, রাসুলুল্লাহ সাঃ এরশাদ করেন, নিঃসন্দেহে আমি আমার উম্মতের জন্য শরাবের চেয়ে দুধের ব্যাপারে বেশি আশংকা করছি। সাহাবায়ে কেরাম তার কারন জানতে চাইলে তিনি বললেন, তারা দুধকে এত বেশি পছন্দ করবে, যার কারনে আমার উম্মত জামা'আত থেকে অনেক দুরে সরে যাবে এবং সেটাকে নষ্ট করতে থাকবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৭২৫ ]
নোট: এই দুধ থেকে পার্থিব সম্পদ উদ্দেশ্য বা জাগতিক বিভিন্ন কাজের ব্যস্ততা। যেখানে শরিয়তের কোনো বিষয় নেই, এমন কাজে জড়িয়ে তারা নামাজের জামাত ত্যাগ করবে আর এতে করে ধীরে ধীরে দীন থেকে দূরে সরতে থাকবে এবং একসময় নামাজও পড়বে না।
আর তেমন অবস্থা এখনই চলছে, তা হয়তো কোনো বিবেকবান মানুষ অস্বীকার করবে না। আমাদের দীন কতটুকু থাকল, তা নিয়ে সামান্য চিন্তাও করছে না এমন মুসলিমের সংখ্যা ক'জন আর দীনের ব্যাপারে চিন্তিত এমন ক'জন আমরা বলতে পারব কি?
হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাযিঃ থেকে বর্নিত, তিনি রাসুলুল্লাহ সাঃ থেকে বর্ননা করেন, তিনি এরশাদ করেন, অতিদ্রুত মুসলমানদের জন্য সর্বোত্তম সম্পদ হবে বকরি। যে বকরি চড়াতে গিয়ে লোকজন পর্বতের চুড়ায় চলে যাবে। এবং ফিত্নার স্থান থেকে নিজের দ্বীন নিয়ে পলায়নকারী হবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৭২৬ ]
হযরত ইবনে তাউস রহঃ স্বীয় পিতা থেকে বর্ননা করেন, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাঃ এরশাদ করেন, ফিৎনা কালীন সর্বোত্তম মানুষ হচ্ছে, ঐ ব্যক্তি যিনি ঘোড়ার লাগাম ধরে এগিয়ে যায় এবং দুশমন সম্বন্ধে ভীত সন্ত্রস্থ থাকে। অথবা গনবিচ্ছিন্ন কোনো লোক, যে, আল্লাহ তা'আলার হক্ব আদায় করে যায়।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৭৩০] [ সুনানে তিরমিযিঃ ২১৭৭ ] [সহিহ তারগিবঃ ১২২৭ ] [ সিলসিলা সাহিহাঃ ৬৯৮ ]
হযরত ইবনে খাসয়াম রহঃ বর্ননা করেন, নিশ্চই রাসূলুল্লাহ সাঃ এরশাদ করেছেন, ফিনাকালীন সর্বোত্তম মানুষ হচ্ছে, ঐ ব্যাক্তি যে, আল্লাহ তা'আলার রাস্তায় তার তলোয়ার দ্বারা অর্জিত সম্পদ , দ্বারা ভক্ষন করে থাকেন এবং ঐ ব্যক্তি, যে পর্বতের চূড়ায় অবস্থান করে তার বকরির পাল দ্বারা জীবন যাপন করে থাকে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৭৩১ ] [ ইকমালু তাহযিবিল কামালঃ ৮/৫৮ ]
হযরত আউন ইবনে আব্দুল্লাহ রহঃ থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, অতিসত্তর এমন কিছু জিনিস প্রকাশ পাবে যেখানে কেউ উপস্থিত না থেকেও যদি সন্তুষ্ট থাকে, সেটা হবে যেন স্বশরীরে উপস্থিত ছিল, পক্ষান্তরে কেউ উপস্থিত থেকেও অসন্তুষ্ট থাকলে সে যেন সম্পুর্ন রুপে অনুপস্থিত ছিল।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৭৩২ ]
নোট: আমরা কি তা দেখতে পাচ্ছি? হয়তো কেউ কেউ। কিন্তু আজ সেসব খুবই তীব্র আকারে দেখা দিয়েছে। আজ পতিতালয়ে বা নাইটক্লাবে যা হচ্ছে তা আমরা টিভি, মোবাইল বা ইন্টারনেট সংযোগে উপভোগ করছি, যদিও আমি তাদের সেখানে নেই, কিন্তু তাদের এসব কাজকর্ম দেখে, উপভোগ করে, তাদের সেখানে উপস্থিত থাকার মতই হচ্ছি উপরে বর্ণিত হাদিসের বাণী অনুসারে।
রবি ইবনে আমীলা রহঃ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযিঃ কে বলতে শুনেছেন, তিনি বলেন, যদি তুমি কাউকে অসৎ কাজ করতে দেখ আর বাঁধা দেয়া সম্ভব না হয়। তাহলে তোমার জন্য এতটুকু যথেষ্ঠ যে, আল্লাহ তা'আলাকে জানিয়ে দাও, নিশ্চই তুমি অন্তর দ্বারা এ অসৎ কাজকে ঘৃণা করে থাক ।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৭৩৪ ]
হযরত আউফ রহঃ মুসাফির নামক এক কুপার এলাকার বাসিন্দা থেকে বর্ননা করেন, তিনি আলী রাযিঃ থেকে বর্ননা করেন, ফিৎনা কালীন যুগে প্রত্যেক মুসলমানকে তার চিরনিদ্রায় মুক্তি দিবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৭৩৬ ]
হযরত আবু বকর ইবনে আইয়াশ রহঃ থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, হযরত আলী ইবনে আবি তালেব রাঃ কে 'চিরনিদ্রা' সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জবাব দিলেন। যে লোক যাবতীয় ফিৎনা থেকে এত অধিক পরিমাণ চুপ থাকে, যার কারনে কোনো ফিৎনাই তাকে আকৃষ্ট করতে পারেনি।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৭৩৫ ]
Comments 0