রাসুল সা এর পরবর্তী খলিফা ও বাদশাহগণের নাম - কিতাবুল ফিতান
রাসুল সা এর পরবর্তী খলিফা ও বাদশাহগণের নাম - কিতাবুল ফিতান
রাসূলুল্লাহ সাঃ এর খাদেম হযরত সাফীনা রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলল্লাহ সাঃ মদীনার মসজিদ প্রতিষ্ঠাকালীন হযরত আবু বকর রাযিঃ একটি পাথর এনে রাখেন, অতঃপর হযরত ওসমান রাযিঃ এসে আরেকটি পাথর রাখেন। এই অবস্থা দেখে রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন, এরা আমার পর খেলাফতের জিম্মাদারী করবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ২৫৮ ]
হযরত আমের শাবী রহঃ বনু মুসতালিকের এক লোক থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমার গোত্র বনু মুসতালিক আমাকে রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নিকট প্রেরন করেন, যেন একথা জিজ্ঞাসা করা হয়, রাসূলুল্লাহ সাঃ পরবর্তী আমরা সাদকা ইত্যাদি কার কাছে দিবে, অতঃপর আমি তার কাছে আসলে, আমার সাথে হযরত আলী ইবনে আবু তালেব রাযিঃ এর সাথে সাক্ষাৎ হয়।
তিনি আমার আসার কারন জিজ্ঞাসা করলে আমি বললাম যে, আমার গোত্র বনু মুসতালিক আমাকে রাসূলুল্লাহ সাঃ এর কাছে প্রেরন করেছে, যেন আমি তাকে জিজ্ঞাসা করি যে, তার পর আমরা কার হাতে সাদকা দিব। একথা শুনে হযরত আলী রাযিঃ বললেন, হ্যা তুমি তার কাছে জিজ্ঞাসা করে আমার কাছে এসে সে সম্বন্ধে জানাবে।
অতঃপর সে রাসূলুল্লাহ সাঃ এর কাছে এসে বললেন, আমাকে আমার গোত্র পাঠিয়েছে, যেন আপনাকে জিজ্ঞাসা করি যে, আপনার পর সাদকা ইত্যাদি আমরা কার হাতে দিব। জবাবে রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন, আমার পরবর্তী সাদকা ইত্যাদি তোমরা আবু বকরের হাতে প্রদান করবে। রাসূলুল্লাহ সাঃ এর কাছ থেকে জবাব শুনে তিনি হযরত আলী রাযিঃ এর কাছে এসে কথাটি জানালেন।
অতঃপর আলি রাযিঃ বললেন, আবার রাসূলুল্লাহ সাঃ এর কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করো, হযরত আবু বকর রাযিঃ এরপর কার হাতে সাদকা প্রদান করবে। এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাঃ কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জবাব দিলেন, আবু বকর এর মৃত্যুর পর তোমরা সাদকা ওমরের হাতে দিবে। কথাটি এসে হযরত আলী রাযিঃ কে বললে, তিনি বলেন তুমি আবারো গিয়ে রাসূলুল্লাহ সাঃ এর কাছে জানতে চাও ওমরের মারা যাওয়ার পর সাদকা কার হাতে দিবে।
এ প্রস্তাব নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাঃ এর কাছে আসলে জবাবে তিনি বলেন, তোমরা ওমরের পর ওসমান ইবনে আফফান এর হাতে সাদকা ইত্যাদি প্রদান করো। ঐ লোক রাসূলুল্লাহ সাঃ এর কাছ থেকে ফিরে এসে হযরত আলী ইবে আবু তালেব রাযিঃ এর কাছে এসে কথাটি বললে তিনি বললেন, তুমি আবারো গিয়ে জিজ্ঞাসা করো ওসমান ইবনে আফফান এর পর কার কাছে সাদকা দিবে। জবাবে বনু মুসতালিকের লোকটি বললেন, এরপর পূনরায় তার কাছে যেতে আমার লজ্জা বোধ হচ্ছে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ২৬০]
বিশিষ্ট সাহাবী হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক রাত্রে জনৈক নেককার লোক আবু বকর রাযিঃ এর ন্যায় এক লোককে স্বপ্নে দেখেন, যিনি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর মৃত্যুর পর হযরত ওমর রাষ্ট্রীয় দায়ীত্ব গ্রহন করেন, তার মৃত্যুর পরপরই হযরত ওসমান রাযিঃ ক্ষমতাসীন হন। হযরত জাবের রাযিঃ বলেন, আমরা সেখান থেকে দাড়িয়ে গেলে বলতে থাকলাম, নেককার লোকটি হচ্ছেন হযরত রসূলুল্লাহ সাঃ আর অন্যরা হলেন, তার পরবর্তী দায়িত্বপ্রাপ্ত খোলাফায়ে কেরাম।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ২৬২ ]
হযরত ওকবা ইবনে আওস আস সাদুসী রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাযিঃ এরশাদ করেছন, আবু বকর পরবর্তী হযরত ওমর দায়িত্বশীল হবেন, তিনি একজন লৌহ মানব তুল্য।
তারপর যিনি খলীফা হবেন, তার নাম হচ্ছে ওসমান ইবনে আফফান, তিনি হচ্ছেন যুননূর। তাকে নির্মম ভাবে হত্যা করা হবে। তাকে আল্লাহ তাআলার রহমতের বিরাট একটি অংশ দান করা হবে।
হযরত মুআবিয়া রাযিঃ এবং তার পুত্র মুকাদ্দাস এলাকার অধিকারী হবেন। উপস্থিত লোকজন বললেন, আপনি কি হাসান হুসাইন রাযি এর কথা বলবেন না। এ প্রশ্ন শুনে তিনি তার কথাটি আবারো বললেন, এক পর্যায়ে তিনি মোয়াবিয়া ও তার পুত্রের কথা বলে সিফাহ, সালাম, মনসূর, জাবের, আল আমীন, গোত্রপতি সহ আরো অনেকের কথা বলেন, প্রত্যেকে একেকজন স্বতন্ত্র ব্যক্তি হবে এবং একজনের সাথে আরেকজনের কোনো মিল থাকবেনা।
তাদের প্রত্যেকজন কাব ইবনে লুআই এর বংশ ধর হবেন। তাদের মধ্যে জনৈক লোক হবেন কাহতানের বাসিন্দা। তাদের কেউ কেউ মাত্র দুই দিন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকতে পারবেন। তাদের একজনকে বলা হবে, আপনি আমাদের অনুগত হয়ে যান, না হয় অবশ্যই তোমাকে হত্যা করবো। এভাবে বলার পরও আনুগত্য স্বীকার না করায় তাকে হত্যা করা হয়।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ২৬৩ ]
Comments 0